খুলনা | শুক্রবার | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৭ ভাদ্র ১৪৩২

টানা ৪৮ ঘন্টার হরতালে স্থবির মোংলা বন্দর, চ্যানেলে সহস্রাধিক নৌযান

মোংলা প্রতিনিধি |
০১:২৯ এ.এম | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫


মোংলা-রামপালসহ বাগেরহাট জেলার সংসদীয় আসন পুর্নবহালের দাবিতে টানা ৪৮ ঘন্টা হরতালে স্থবির হয়ে পড়েছে মোংলা সমুদ্র বন্দর। জেলার চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি আসন কেটে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেন জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দরা। 
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি সুত্র জানায়, ৪৮ ঘন্টার টানা হরতাল-অবরোধে স্থবির হয়ে পরে মোংলা বন্দর, ইপিজেড, ইকোনমিক জোনসহ প্রায় ৫৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। বন্দরের বহিঃনোঙর, হারবাড়িয়া, ভ্যাসক্রিকি ও জেটি এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে পণ্য খালাস-বোঝাই কাজ চললেও নৌ-চলাচল বন্ধ থাকায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারেনি লাইটার বা কার্গো জাহাজ। তাই দুইদিন যাবত দেশের বিভিন্ন জেলা বা বিভাগীয় শহরে যাওয়ার জন্য পশুর চ্যানেলে অবস্থান করে আছে পণ্য বোঝাই প্রায় শত শত বোট, কার্গো ও লাইটার জাহাজ। 
হরতালে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে নদী পাড়াপার ও নৌ-চলাচল। দুইদিন যাবত মোংলা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। বন্ধ রয়েছে ভ্যান ও রিক্সাসহ অন্যান্য যান চলাচল, স্কুলে যায়নি শিক্ষার্থীরা। গাড়ি না চলায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ ও পথচারীরা। অন্যদিকে সড়ক পথ বন্ধ থাকায় বন্দর, ইপিজেড ও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সামনে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষায় আছে শত শত ট্রাক ও লড়ি।  অলস সময় পার করে ট্রাক ও লড়ি। 
বুধ থেকে শুরু করে বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে মোংলা-খুলনা সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে যান চলাচল বন্ধ রাখে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। 
মোংলা-খুলনা মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড, দ্বিগরাজ, মোংলা কলেজ মোড়, হাসপাতাল ঘেট, শেরাবুনিয়া, কানাইনগর, কুমারখালী ও মোংলা নদী পাড়াপার ঘাটসহ প্রায় ১৮টির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ভেড়ীগেট দিয়ে হরতাল পালন করছে সর্বদলীয় কমিটির নেতৃবৃন্দরা। নদীতেও কোন নৌ-চলাচল করতে দেয়া হয়নি। নদী পার হতে না পেরে গার্মেন্টস কর্মীরাও কর্মস্থলে বা স্কুলে যায়নি শিক্ষার্থীরা। ছেড়ে যায়নি কোন দূরপাল­ার বাস। বন্ধ রাখা হয়েছে ইপিজেডের গামেন্টস, মোংলা উপজেলার ও পৌরসভাসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস ও সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে হরতাল অবরোধ পালন করেন ব্যবসায়ীরা। 
বাগেরহাট জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম বলেন, গেল ৩০ জুলাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোংলা-রামপালসহ বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কর্তন করে অন্যত্র নেয়ার প্রস্তাব দিলে ক্ষোভে ফেটে পরে বাগেরহাটবাসী। দেয়া হচ্ছে একের পর এক আন্দোলনের কর্মসূচি। নির্বাচন কমিশন মোংলা বন্দরকে অচল করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণ মোংলা সমুদ্র বন্দর। এ বন্দর না থাকলে এ অঞ্চলে কিছু থাকবে না। তাই বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে এ সমুদ্র বন্দরটি। যদি নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে শনিবার থেকে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে এবং এ আন্দোলন নিয়ে যদি কোন বিচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তবে এর দায়ভার নির্বাচন কমিশনকেই নিয়ে হবে বলে জানান জেলার এ নেতা। 

্রিন্ট

আরও সংবদ