খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২ আশ্বিন ১৪৩২

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন : রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্যে আসতে হবে

|
১২:১৩ এ.এম | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫


চূড়ান্ত হওয়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক হয়েছে। পরিতাপের বিষয়, এ বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি। বৈঠকে বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফেব্র“য়ারিতে নির্বাচন না হলে শুধু দেশের ভেতরে নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তায়ও সমস্যা হবে। দেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা যাবে না। জামায়াতে ইসলামী বলেছে, আগামী নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হলে তা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে। ওদিকে এনসিপি বলেছে, মৌলিক সংস্কার হতে পারে শুধু গণপরিষদ ভোটে। সংস্কার অসমাপ্ত রেখে ফ্যাসিবাদী কাঠামো বহাল না রাখার পক্ষে এনসিপি। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে স্বৈরাচার ফিরে আসার সব পথ বন্ধ করতে হবে। আর সংস্কার হতে হবে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও সমঝোতার ভিত্তিতে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী নির্বাচন হবে মহোৎসবের।
প্রধান উপদেষ্টা যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, তা তার মহৎ উদ্দেশ্যেরই প্রতিফলন। কিন্তু বাস্তবে আমরা যখন দেখি, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে আসছে না, তখন হতাশ হতে হয় বৈকি। বর্তমানে বড় তিন দলের মধ্যে আগামী দিনের রাজনীতির রূপরেখা বিষয়ে যে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে, তার মীমাংসা হচ্ছে না। তিন দলের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হবে কি না, বিষয়টি এখনো সংশয়যুক্ত। প্রধান যে দ্বন্দ্ব তা হলো, বিএনপি চাচ্ছে জুলাই সনদ নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে, বাকি দল দু’টি নির্বাচনের আগেই তা কার্যকর করার পক্ষপাতী। নির্বাচন প্রচলিত পদ্ধতিতেই হবে, নাকি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে, এ প্রশ্নেও বিএনপি ও জামায়াত দ্বিধাবিভক্ত। এসব দ্ব›েদ্বর মীমাংসা না করে কীভাবে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যাবে, তা এক কঠিন প্রশ্ন। অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, সব সংস্কার নভেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে, কারণ তফশিল ঘোষণার পর কোনো মৌলিক কাজ করা যাবে না। তার কথার পর বলতেই হবে, নভেম্বরের আগেই মতপার্থক্যের বিষয়গুলো নিষ্পত্তি জরুরি হয়ে পড়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা একটা আশঙ্কার কথাও বলেছেন। তিনি বলেছেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি একটি অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এটা ঠিক, নির্বাচন বানচাল করার অপচেষ্টা কোনো কোনো মহল নিতেই পারে। কিন্তু এই আশঙ্কার কথা ভেবে চুপচাপ বসে থাকলে তো চলবে না। কোথায় কোথায় কীভাবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তা উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নিতে হবে অবশ্যই। মোট কথা, নির্বাচন পেছানো যাবে না কোনোভাবেই। আমরা মনে করি, নির্বাচিতরা সরকার গঠন করলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেগবান হবে। এমনিতেই গত রেজিম দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করে দিয়ে গেছে। সেগুলো পুনরুদ্ধার করা জরুরি। এবং সেজন্য দরকার একটি নির্বাচিত সরকার। সবশেষে আমরা আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলো সব ধরনের ঝামেলা মিটিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ