খুলনা | মঙ্গলবার | ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

ভ্রমণ ভিসায় মানবপাচার : প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

|
১১:৩০ পি.এম | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


সা¤প্রতিক সময়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে ভ্রমণের নামে মানবপাচারের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ভ্রমণ ভিসা ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। কিরগিজস্তানসহ মধ্য এশিয়ার নানা দেশে দুই মাসের ভিজিট ভিসা দিয়ে পাঠানো হচ্ছে শ্রমিকদের।
প্রতিশ্র“তি দেওয়া হয়, সেখানে পৌঁছার পর এক বছরের ভিসা দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাঁরা অবৈধ হয়ে পড়েন, গ্রেফতার হন এবং খালি হাতে দেশে ফেরত আসেন। এই দালালচক্র অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে। তারা চাকুরিপ্রত্যাশীদের কাছে লোভনীয় বেতনের মিথ্যা প্রতিশ্র“তি দেয় এবং প্রসেসিংয়ের নামে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে।
এরপর তাঁদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় স্বল্প মেয়াদের ভ্রমণ ভিসা, যার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় গন্তব্যে পৌঁছানোর কয়েক দিনের মধ্যেই। সেখানে পৌঁছানোর পর তাঁদের জন্য কোনো কাজ বা থাকার জায়গা থাকে না। জহিরুল শেখ, জাকির হোসেন, সোহেল মিডা ও রাকিব মিডার মতো অসংখ্য মানুষ এই জঘন্য প্রতারণার শিকার। এই প্রতারণার পেছনে মূলত দেশীয় দালালচক্র কাজ করছে। 
তারা চার-পাঁচ লাখ থেকে শুরু করে সাত-আট লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে। কখনো ইউরোপের স্বপ্ন দেখানো হয়, কখনো চকোলেট কারখানা বা গার্মেন্টসে চাকরির আশ্বাস দেওয়া হয়। বাস্তবে দেখা যায়, কোনো কম্পানিই তাঁদের দায়িত্ব নেয় না, বরং পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতারের শিকার হন অসহায় অভিবাসীরা। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবপাচারকারী চক্র এখন শুধু সমুদ্রপথ নয়, বরং ভিজিট ভিসা, কনফারেন্স ইনভাইটেশন, এমনকি হজ ভিসাও ব্যবহার করছে। মানবপাচার বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর উচিত, যে দেশগুলো মানবপাচারের প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেসব দেশের সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা। এর মাধ্যমে উভয় দেশের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে কাজ করতে পারবে এবং পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া সহজ হবে।
পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাও জরুরি। মানুষ যেন যাচাই-বাছাই না করে দালালদের হাতে টাকা তুলে না দেয়, সে বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। মানবপাচার রোধ কেবল আইন প্রয়োগের বিষয় নয়, এটি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্বও।

্রিন্ট

আরও সংবদ