খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৯ আশ্বিন ১৪৩২

সংবাদ সম্মেলনে এডহক কমিটি

মেট্রোপলিটন কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৩৯ এ.এম | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫


মেট্রোপলিটন কলেজ খুলনার সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ দিবাকর বাওয়ালির নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে কলেজের গভর্নিং বডি (এডহক কমিটি) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির সভাপতি মোঃ মাসুদ পারভেজ।
তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর দিবাকর বাওয়ালি আত্মগোপনে চলে যান এবং একই মাসে পরিবারসহ ভারতে চলে যান। ছুটি বা অনুমতি ছাড়াই দেশত্যাগ করে তিনি কলেজে আর যোগদান করেননি। এ ছাড়া তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি উপেক্ষা করে সহকারী অধ্যাপক এস এম রওনাকুজ্জামানকে অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে যান। একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও কোনো জবাব দেননি তিনি। ফলে ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, অধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে দিবাকর বাওয়ালি কলেজের আয় ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন। শুধু ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ফি থেকেই তিনি আত্মসাৎ করেন ১ লাখ ১২ হাজার ৫৩৪ টাকা। ২০১৮ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অফিস সহায়ক, ল্যাব এসিস্ট্যান্ট ও অফিস সহকারী পদে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অসংখ্য ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। কলেজের এক শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের লিখিত স্বীকারোক্তিতেও তার এই নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ মিলেছে, যেখানে উলে­খ আছে ৩৩ জনের কাছ থেকে এক কোটিরও বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আদালতে চলমান। এছাড়া দিবাকর বাওয়ালি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বরখাস্তের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোন তুলে তাকে দিতে বাধ্য করেছেন। তিনি কিস্তি পরিশোধ না করায় বর্তমানে বহু শিক্ষক-কর্মচারী মামলায় জড়িয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ২০২৫ সালের জুলাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত টিম কলেজে পরিদর্শন করতে এলে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে কেসিসির ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনির সদস্য, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার উপস্থিতিতে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের তালা ভেঙে দেখা যায়, তিনি আগেই শিক্ষক হাজিরা খাতা, রেজুলেশন খাতা, বিল-ভাউচারসহ বহু নথি সরিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া ৫ লাখ টাকা নগদ অর্থ, প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, প্রিন্টারসহ মূল্যবান সরঞ্জামও নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
গভর্নিং বডির সভাপতি আরও অভিযোগ করেন, দিবাকর বাওয়ালি বর্তমানে ভারতে বসেও সহযোগীদের মাধ্যমে কলেজ ও কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। এবং কলেজের সভাপতি ও শিক্ষকদের নামে প্রায় ২০টি মামলা দায়ের করেছেন। তার সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধা কলেজের বহি®কৃত অধ্যক্ষ এস এম মোমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন কাজ করছেন। তারা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কলেজের দাতা সদস্য সাজানোরও চেষ্টা করেছেন, যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কলেজের হিতৈষী সদস্য ইয়াসীন আরাফাত রুমী, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ তাইফুজ্জামান, শিক্ষক প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান শামীম, শিক্ষক এফ এম মিজানুর রহমান, শেখ মইনুদ্দীন, মাহাবুবুর রহমান মোড়ল, শফিকুল ইসলাম খান, হাবীবুল­া আব্বাসী, শরিফুল আলম, আঃ সালাম পাইক, এস এম আসাদুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

্রিন্ট

আরও সংবদ