খুলনা | সোমবার | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৩ আশ্বিন ১৪৩২

খাগড়াছড়ির সহিংসতায় তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন রয়েছে : পার্বত্য উপদেষ্টা

খবর প্রতিবেদন |
০৪:২২ পি.এম | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫


পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক ধর্ষণকাণ্ডের পর সৃষ্ট বিক্ষোভ ও উত্তেজনার পেছনে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন থাকতে পারে।

আজ রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে খাগড়াছড়িতে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতি উত্তরণের উপায় নিয়ে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।

সভায় পার্বত্য উপদেষ্টা উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাহাড়ি-বাঙালি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি পাহাড়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি রোধ ও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আইনশৃঙ্খলা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান। ভবিষ্যতে যেন এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, পাহাড়ের শুধুমাত্র সরকারি বাহিনীর কাছেই অস্ত্র থাকবে। এর বাইরে কারো কাছে অস্ত্র থাকতে পারবে না। চাঁদাবাজির কারণেই এ এলাকায় উন্নয়নে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসনকে এ বিষয়ে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনার পর থেকে জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে কয়েক দিন ধরে অবরোধ, মিছিল, সমাবেশ ও সহিংসতা চলছে।

শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ, মহাজন পাড়া, নারিকেল বাগান, চেঙ্গী স্কোয়ার ও শহীদ কাদের সড়কে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্বনির্ভর ও নারিকেল বাগান এলাকায় কিছু দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর ও গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিজিবির সাত প্লাটুন সদস্য ছাড়াও সেনাবাহিনী ও পুলিশ শহরের বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে।

এসব সহিংসতায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া, রাতে খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ বিহারে নাশকতার প্রস্তুতিকালে তিন যুবককে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ ঘটনার কারণে সাজেক ভ্রমণে যাওয়া প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। পরে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তারা খাগড়াছড়ি শহরে ফিরে এসে রাতেই নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হন। তবে এখনো খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হোটেলে বিপুল সংখ্যক পর্যটক দুর্ভোগে রয়েছে।

‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে শনিবার সকাল ও সন্ধ্যায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়। আলুটিলায় একটি অ্যাম্বুলেন্স এবং নারানখাইয়া এলাকায় একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।

বর্তমানে এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ