খুলনা | সোমবার | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৩ আশ্বিন ১৪৩২

গণগোসল, হাঁস ধরা আর পশুর তীরে মানববন্ধন

নদীসত্বাকে ফিরিয়ে আনতে মোংলায় ব্যতিক্রমী আয়োজন

মোংলা প্রতিনিধি |
১২:২৯ এ.এম | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদী আজ কয়লা, প্লা¬স্টিক, বিষ আর শিল্প দূষণের কবলে। নদীর জীবন সত্বাকে ফিরিয়ে আনতে ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রোববার দুপুরে মোংলার দক্ষিণ কাইনমারি এলাকায় পশুর নদীর তীরে বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ‘নদী বাঁচাও, সুন্দরবন বাঁচাও’ শীর্ষক আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজন  করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ধরা (ধরিত্রী রক্ষায় আমরা), পশুর রিভার ওয়াটারকিপার, লিডার্স ও বাদাবন সংঘ। 
দুপুরে এসকল অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ও সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী মোঃ নূর আলম শেখ। এতে প্রধান অতিথির ছিলেন সেভ দা সুন্দরবন ফাউন্ডেশন’র চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। এছাড়া সমাজসেবক আব্দুল মান্নান হাওলাদার, সমাজকর্মী আবু হোসেন পনি, ক্রীড়া সংগঠক শেখ রুস্তুম আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব হাওলাদার, শেখ শাকির হোসেন, মৃধা ফারুকুল ইসলাম, পরিবেশকর্মী আব্দুর রশিদ হাওলাদার, ধরার নেতা এস এম জানে আলম বাবু, হাছিব সরদার ও মেহেদী হাসানসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনই প্রকৃতিকে হত্যার অন্যতম মাধ্যম। তাদের প্রতিহত করতে না পারলে আগামী প্রজন্মকে আমরা কি উপহার দিবো। তাই নদী দখলকারীদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। নদী বাঁচলে-উপকূল বাঁচবে, আর সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশও বাঁচবে। 
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, নদীর স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণ পশুর নদীর পানিকে বিষাক্ত করে ফেলেছে। আর সেই বিষাক্ত পানি গিয়ে সুন্দরবনে ডুকে যাচ্ছে। একদিকে মাছের বংশ বিস্তার ধ্বংস হচ্ছে, অন্য দিকে সুন্দরবনে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া গাছপালা, প্রাণীকুল ও বনজ সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। ফলে সুন্দরবনে বনজ সম্পদ, বন্যপ্রাণী, জলজপ্রাণীর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। এক গবেষণায় পশুর নদীর মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে বলে এসব তথ্য তুলে ধরে তিনি আহŸান জানালেন, কয়লা-দূষণ, প্ল¬াস্টিক, শিল্পদূষণ ও বিষমুক্ত করে সুন্দরবনের নদ-নদীকে ফিরিয়ে আনা এখন জরুরি যা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
আলোচনা শেষে অনুষ্ঠিত হয় পরিবেশ ও নদী রক্ষা উপলক্ষে প্রথমে মানববন্ধন, পরে ব্যতিক্রমী আয়োজন পশুর নদীতে হাঁস ধরা, সাঁতার প্রতিযোগিতা ও নদীতে নেমে আগে যেমন নারী-পুরুষ ও শিশুরা গণগোসল করতো সেই রকম গণগোসলের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও ইয়ুথ ফর সুন্দরবন গ্র“প প্লাস্টিক-নিষ্কাশন উদ্যোগ হিসেবে পাটের ব্যাগ বিতরণ করে। শেষে একটি নদী কেন্দ্রীক গানের-আড্ডার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করে আয়োজকরা।

 

্রিন্ট

আরও সংবদ