খুলনা | সোমবার | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ১৩ আশ্বিন ১৪৩২

অক্সিজেন খোলায় শেখ সাইফুলের মৃত্যু

খুমেক হাসপাতালের তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত জবানবন্দি নিহতের ভাইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক ও খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি |
০১:১৩ এ.এম | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর অক্সিজেন খুলে নেওয়ায় মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে লিখিত জবানবন্দী দিয়েছেন মৃত শেখ সাইফুল ইসলামের বড় ভাই শেখ আশরাফুল ইসলাম।
রবিবার দুপুরে তদন্ত কমিটির সভাপতি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিটের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ শেখ মোয়াজ্জেম হোসেনের নিকট তিনি জবানবন্দি প্রদান করেন।
লিখিত জবানবন্দি শেষে আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বকশিষ না পেয়ে ওয়ার্ড ক্লিনার জব্বার আমার ছোট ভাইয়ের অক্সিজেন খুলে অর্থের বিনিময়ে অন্য রোগীকে দেয়। অক্সিজেন খুলে নেওয়ার ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে আমার ভাই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। আমার মায়ের করুন আকুতিও ওয়ার্ডের ক্লিনারসহ কারো মন গলাতে পারিনি। ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলদের অব্যস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার কারণে ভাইকে অকালে চলে যেতে হলো।
তিনি জানান, আমার ছোট ভাই একটি ছোট একটা হোটেল চালিয়ে সংসার চালাত। এই অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর ফলে মা, স্ত্রী ও ৬ বছর বয়সি মেয়েটা পথে বসেছে। তিনি ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে ওয়ার্ড ক্লিনার জব্বার কর্তৃক অক্সিজেন খুলে নেয়ার পর রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক এবং তদন্ত কমিটির সাথে সাক্ষাৎ করেছে বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসী। রোববার দুপুরে সংগঠনের সহ-সভাপতি মোঃ জামাল মোড়ল, মোঃ সিরাজ উদ্দিন সেন্টু ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহাবুবুর রহমান খোকনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম ভুট্টো, নির্বাহী সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিপু, মোঃ মেজবাহ উদ্দিন পাপ্পু, মোঃ বাপ্পি, মোঃ আবু বক্কার, মোঃ আজমল হোসেন।
আমরা খুলনাবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহাবুবুর রহমান খোকন বলেন, আমরা পরিচালককে বলেছি মুমূর্ষু রোগীর অক্সিজেন খুলে নেওয়া সিন্ডিকেটের প্রধানকে এবং ওই সময় কোন কোন ডাক্তার ও নার্স দায়িত্বে ছিল? তারা কি করছিল? এ সকল বিষয় তদন্ত করে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পরিচালককে আরো বলেছি, ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারকে অর্থিক সহায়তা প্রদানসহ হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা এবং পরিবশে দ্রুত ফিরিয়ে আনা না হলে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উলে­খ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর সকালে যোগীপোল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খানাবাড়ী কপোতাক্ষ গ্রামের শেখ সাইফুল ইসলাম (৩৮) কে কিডনীজনিত কারণে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের মেডিসিন ইউনিট-১ এর ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যার পর সাইফুলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বজনরা অক্সিজেনের জন্য ডাক্তার, নার্সসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ছোটাছুটি করে ব্যার্থ হয়। অনেক চেষ্টা করে রাতে অক্সিজেনের ব্যবস্থা হয়। পর দিন সকালে সেই অক্সিজেন ওয়ার্ডের ক্লিনার জব্বার এসে খুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী অন্য রোগীকে দেয়। অক্সিজেন খুলে নেওয়ার ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে সাইফুল ইসলাম মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ