খুলনা | রবিবার | ০৫ অক্টোবর ২০২৫ | ১৯ আশ্বিন ১৪৩২

সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবি

নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের দাবি, বিএফইউজের

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৮ এ.এম | ০৫ অক্টোবর ২০২৫


বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- বিএফইউজের নির্বাহী কমিটির সভায় অবিলম্বে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন এবং সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন নির্ধারণ করাসহ ১০ দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার সকালে গাজীপুরে বিএফইউজের নির্বাহী কমিটির সভায় এসব দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের বাকি দাবিগুলো হলো সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালা কানুন বাতিল, ডিএফপিকে দুর্নীতিমুক্ত করা এবং সরকারি বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রদানে স্বচ্ছতা আনাসহ ১০ দফা।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে সহ-সভাপতি মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, একেএম মোহসীন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন ও এহতেশামুল হক শাওন, কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, দপ্তর সম্পাদক মোঃ আবু বকর, প্রচার সম্পাদক মোঃ শাহজাহান সাজু, নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ মোদাব্বের হোসেন, অর্পনা রায়, মুহাম্মদ আবু হানিফ, ম হামিদুল হক মানিক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি মোঃ আনিসুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার সভাপতি গণেশ দাশ, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল ইসলাম হেলালী, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুল জলিল ভূঁইয়া, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর সাধারণ সম্পাদক মাহফুজের রহমান রিপন, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর সভাপতি এইচ এম দেলোয়ার, সাধারণ সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ, সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী সভাপতি সিদ্দিক আল মামুন, বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি আযাদ আলাউদ্দিন, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক, সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, মুন্সীগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন মানিক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভার এক প্রস্তাবে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও কার্যত তা হচ্ছে না। অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে। তাই বর্তমান সরকারকে দ্রুত নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন এবং দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে সংবাদপত্র, অনলাইন, টেলিভিশন, রেডিও ও মাল্টিমিডিয়ার জন্য অভিন্ন ওয়েজ বোর্ড করতে হবে।
অপর এক প্রস্তাবে বলা হয়, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে যেমন পুঁতে রাখা হয় স্থলমাইন, তেমনি সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধে নানা ধরনের স্থল মাইন ছড়িয়ে আছে। এই স্থলমাইন হচ্ছে বিভিন্ন নিপীড়নমূলক আইন। সাংবাদিকদের ধরতে অন্তত ২০টি আইন আছে। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এমন আইন রয়েছে ৩২টি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী আইনগুলোকে চিহ্নিত করে বাতিল করতে হবে।
আরেক প্রস্তাবে বলা হয়, সরকার সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা নীতিমালার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই নীতিমালায় আইনি সুরক্ষার বিষয়টি আসলেও চাকুরি ক্ষেত্রে সুরক্ষার বিষয়টি এখানে সেভাবে আসেনি। অধিকাংশ পত্রিকা সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন দেয় না, যখন তখন চাকুরিচ্যুতির সুবিধার্থে সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের নিয়োগপত্র দেয় না। ৬ মাস পর চাকুরি স্থায়ী করার নিয়ম থাকলেও তা মানে না। ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বেতন দেয় না ৯০ ভাগ গণমাধ্যমে। চাকুরি চলে গেলে বা চাকুরি ছেড়ে দিলে দেনা পাওনা পরিশোধ করে না। এ বিষয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি। অধিকাংশ গণমাধ্যম ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের বেতন দেয় না। কিছু কিছু পত্রিকা ২ থেকে ৫ হাজার টাকা বেতন দেন। আবার কোনো কোনো টিভি জেলা প্রতিনিধির কাছ থেকে উল্টো টাকা চায়। এভাবে সাংবাদিকদের দুর্নীতিগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নীতিমালা থাকা অত্যন্ত জরুরি। পেশাগত দায়িত্বপালনকালে বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এ্যাসাইনমেন্টে ক্যামেরা, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল, গাড়ি মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শারীরিক ক্ষতির জন্য দুর্ঘটনা বিমা থাকতে হবে। চিকিৎসার ব্যবস্থা মালিকপক্ষকেই নিতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এ্যাসাইনমেন্ট কাভারের জন্য প্রতিষ্ঠানকে অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। সংবাদকর্মীদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা সরঞ্জাম এবং দুর্ঘটনা ভাতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। স্থায়ী সাংবাদিক কর্মীদের জন্য দুর্ঘটনা বিমা ও চিকিৎসা বিমার ব্যবস্থা, জীবন বিমা, প্রভিডেন্ট ফাণ্ড ও গ্র্যাচুটটির ব্যবস্থা করতে হবে। সংবাদ কর্মীদের আইনি সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠানে আলাদা ব্যবস্থা রাখতে হবে। নারী সংবাদকর্মীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বিশেষ করে তাদের জন্য আলাদা রেস্টরুম/ ওয়াসরুম রাখতে হবে।
সভায় সাংবাদিকদের সপ্তাহিক ছুটি ২ দিন নির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সপ্তাহে ২ দিন ছুটি ভোগ করে। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও ২ দিন ছুটির ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সাংবাদিকদের কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন সাপ্তাহিক ছুটিও পায় না। এতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক চাপ বাড়ছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ