খুলনা | সোমবার | ০৬ অক্টোবর ২০২৫ | ২০ আশ্বিন ১৪৩২

অপর ভাই আশঙ্কাজনক, ১২ জনের নামে মামলা

মোরেলগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে চাচাতো ভাইকে চোর সাব্যস্ত করে পিটিয়ে হত্যা

মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি |
০৪:০৩ পি.এম | ০৫ অক্টোবর ২০২৫


বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে মোঃ কালাম খান (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকে চোর সাব্যস্ত করে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে। গত শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার চিংড়িখালী ইউনিয়নর ছোট জামুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কালাম খান চিংড়াখালী ইউনিয়নের ঢেপুয়ার পাড় গ্রামের ওয়াজেদ আলী খান ওরফে কালু খানের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে কালাম খান ও একই বংশের সোহেল খানের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে আদালতে মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বাজার থেকে ফেরার পথে সোহেল খান তাঁর লোকজন কালাম খান ও তাঁর বড় ভাই লুৎফর খানকে চুরির অভিযোগ দিয়ে ধরে নিয়ে হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এক পর্যায়ে কালাম খান অচেতন হয়ে পড়লে তাঁকে রাস্তায় এনে পুলিশে দেয়। পরে পুলিশ তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গুরুতর অবস্থায় দুই ভাইকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কালাম খানকে মৃত ঘোষনা করেন। তাঁর বড় ভাই লুৎফর খানকে অবস্থাও সংকটাপন্ন। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত কালামের ছেলে মোঃ রাব্বি খান বলেন, সন্ধ্যায় আমার আব্বা ও চাচা ওষুধ আনতে পাশের বাজারে যান। সেখান থেকে সাড়ে সাতটার দিকে সোহেল খান লোকজন নিয়ে তাদের ধরে নিয়ে যায়। সোহেল খা‘র নেতৃত্বে মাকছুদু মাওলানা, মনু খাঁ, খবিরসহ ২৫-৩০ জন মিলে আমার বাবা ও চাচাকে মারধর করে ছিনতাই ও চুরির কথা বলে পুলিশে দেয়। 
রাব্বি আরও বলেন ১৫-২০ বিঘা জমির একটা মামলা চলে, সেই জমির বিরোধ ছিল তাদের সাথে। সেই কারণেই তারা আমার বাবারে হত্যা করছে।
চিংড়াখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও নিহতের প্রতিবেশী মামুন খান জানান তারা একই বংশের লোক। সোহেল খান ও কালাম খানের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে শনিবার রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সোহেল খান ও তার সহযোগীরা হামলা চালায়। এতে কালাম খান নিহত এবং তার বড় ভাই লুৎফর খান গুরুতর আহত হন। সোহেল খান চিনাখালি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে হত্যার ঘটনায় রোববার দুপুরে সাবেক যুবলীগ নেতা সোহেল খান, উপজেলা জামায়েতের সেক্রেটারি মাওলানা মাকসুদ আলী খানসহ ১২জনকে আসামী করে মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের ছেলে রাব্বি খান। চিংড়াখালী এলাকার বাসিন্দা সোহেল খানের বিরুদ্ধে এর আগেও মোরেলগঞ্জ থানায় একাধিক চুরি, ছিনতাই, মারধর ও মাদক মামলা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে তাঁরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
সকালে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, লোকজন দু’জনকে চোর হিসেবে ধরে মারধর করছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। সেখানে একজন মারা যায়। নিহতের পরিবার মামলা দিয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। এখানে ছাড় দেওয়া হবে না।

্রিন্ট

আরও সংবদ