খুলনা | সোমবার | ০৬ অক্টোবর ২০২৫ | ২০ আশ্বিন ১৪৩২

নগরীতে পিতৃ হত্যার দায় স্বীকার ছেলে ও তার স্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:২৬ এ.এম | ০৬ অক্টোবর ২০২৫


নগরীর বসুপাড়া এলাকায় পিতা লিটন খানকে হত্যার ঘটনায় তার কিশোর ছেলে ও তার কিশোরী স্ত্রীর দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। রোববার বিকেলে খুলনা মহানগর হাকিম রাকিবুল ইসলাম এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন। গত ২ অক্টোবর রাতে বসুপাড়া এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে লিটন খানের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে তার ছোট ছেলে ও পুত্রবধূ পলাতক ছিলেন। শনিবার রাজধানীর পল­বী থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো নগরীর বসুপাড়া বাঁশতলার নিহত লিটন খানের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক লিমন (১৯) ও  তার স্ত্রী মোছা. চাঁদনী আক্তার (২০)।
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, গত ২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিহত লিটন খানের স্ত্রী মামলার বাদী রয়েল মোড় কর্মস্থল থেকে ডিউটি শেষে বাসায় ফিরে দেখেন বাসার রুম তালাবদ্ধ। তালা খুলে দেখেন তার স্বামী লিটন খান রুমের ফ্লোরে শুয়ে আছে এবং তার গলায় রক্তাক্ত অবস্থায় ওড়না পেঁচানো। রুমের ভিতরে বাদী চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে ভিকটিম লিটন খানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। বাদী জানান তার স্বামীকে রিকশা কিনে দেয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। বাদীর ছেলে লিমন ও তার স্ত্রী উত্তোলনকৃত টাকা তাদের না জানিয়ে গত ১৫/২০ দিন পূর্বে বাসা হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যায়। পরবর্তীতে কয়েকদিন পূর্বে বাদীর ছেলে ও তার স্ত্রী বাসায় ফিরে আসে। ভিকটিম লিটনের কাছে ১৫ হাজার টাকা আছে বলে জানতে পেরে ওই টাকা নেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ভিকটিম লিটন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে ২ অক্টোবর ভিকটিমের স্ত্রী বাড়িতে না থাকায় লিটন বাসায় একাই ছিলেন। এ সুযোগে ছেলে লিমন ও তাঁর স্ত্রী পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। প্রথমে তাঁরা শ্বাসরোধে লিটনকে অচেতন করেন এবং পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ঘরে থাকা ধারালো বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যার পর তারা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় গত ৩ অক্টোবর সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা (যার নং-৩) দায়ের করেন। হত্যার মূল রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের সনাক্ত করে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ গত ৪ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা মহানগরীর পল­বী থানাধীন সেকশন-৭ এলাকায় পল­বী থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালায়। 
অভিযানে হত্যাকান্ডে জড়িত আবু বক্কর সিদ্দিক লিমন (১৯) ও তার স্ত্রী মোছাঃ চাঁদনী আক্তার (২০) কে গ্রেফতার করা হয়। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চাঞ্চল্যকর লিটন হত্যাকান্ডে প্রেসব্রিফিং করেন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সুদর্শন কুমার রায়। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন কেএমপির অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ হুমায়ুন কবির, সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) খোন্দকার হোসেন আহম্মদ, সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন জানান, রোববার অভিযুক্ত দু’জন মহানগর হাকিম রাকিবুল ইসলামের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ