খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৯ অক্টোবর ২০২৫ | ২৩ আশ্বিন ১৪৩২

৮৩৫ মসজিদ ধ্বংস করেছে ইসরায়েল

দুই বছরে গাজায় ২৫০ ইমামকে হত্যা

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৮ এ.এম | ০৮ অক্টোবর ২০২৫


গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যায় শুধু সাধারণ মানুষই নয়, নিশানা হয়েছেন মসজিদের ইমাম এবং ধর্মীয় ব্যক্তিরাও। এখন পর্যন্ত ২৫০ জন খতিব, ইমাম ও ধর্মীয় ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই সময়ে ধ্বংস করেছে ৮৩৫টি মসজিদ। ক্ষতিগ্রস্ত করেছে আরও ১৮০টি মসজিদ। হামলা থেকে রেহাই পায়নি খ্রিস্টান উপাসনালয়ও।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ধারাবাহিক বোমা হামলায় ২৩৩ জন মসজিদের খতিব, ইমাম, দাঈ এবং ২০ জন খ্রিস্টান ধর্মযাজক নিহত হয়েছেন। মসজিদসহ ভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোকে হামলার মূল লক্ষ্য করা হয়েছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা বলেন, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনি সমাজকে আত্মিক ও  নৈতিকভাবে ধ্বংস করতে চাইছে। এজন্য তারা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের হত্যা করছে, মসজিদ-গির্জা উড়িয়ে দিচ্ছে এবং নাগরিক স্থাপনা ধ্বংস করছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় নেতারা জাতির নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক। তাই দখলদার বর্ণনার পক্ষে সাংস্কৃতিক শূন্যতা তৈরি করতে তাদের হত্যা করে ধর্মীয় ও জাতীয় চেতনা স্তব্ধ করতে চায় ইসরায়েল।
তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন প্রখ্যাত দাঈ ও খতিব ইউসুফ সালামা, যিনি আগে ফিলিস্তিনের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ও আল-আকসা মসজিদের খতিব ছিলেন। এছাড়া নিহত হয়েছেন গাজার পরিচিত ইসলামী আলোচক ও বক্তা ওয়ায়েল আজ-জারদ ও কোরআন শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ও আলেম ওয়ালিদ আওয়াইদা।
গাজার সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত ৮৩৫টি মসজিদ পুরোপুরি ধ্বংস করেছে, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে আরও ১৮০টি মসজিদ। পাশাপাশি গাজার প্রধান তিনটি গির্জাতেও একাধিকবার বোমা হামলা চালানো হয়েছে।
এসব গির্জা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, সেখানে অনেক নারী-শিশুসহ অন্তত ২০ জন খ্রিস্টান নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গির্জাগুলোর মধ্যে রয়েছে- গাজার ঐতিহাসিক সেন্ট পারফিরিয়াস (রোমান অর্থডক্স), হোলি ফ্যামিলি চার্চ (ক্যাথলিক) এবং ব্যাপটিস্ট ইভানজেলিকাল চার্চ।
ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা বলেন, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও উপাসনালয়ের ওপর এ হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন। এটি স্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধ ও ধর্মীয় নিপীড়নের শামিল।
গণহত্যার দুই বছর : ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ নির্মম গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। সরকারি হিসাবমতে, এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজার ১৩৯ জন, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। দুর্ভিক্ষ ও ওষুধ সংকটে আরও ৪৬০ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে, এদের মধ্যে ১৫৪ জন শিশু।
তবে এই হামলা, গণহত্যার মাঝেও গাজার ধ্বংসস্তূপে এখনো ‘আল­াহু আকবার’ ধ্বনি তুলে আজান দিচ্ছেন অনেকে। সূত্র : আল জাজিরা।

্রিন্ট

আরও সংবদ