খুলনা | রবিবার | ১২ অক্টোবর ২০২৫ | ২৬ আশ্বিন ১৪৩২

পরিচালকের প্রত্যাহার দাবি

খুমেক হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা : বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র নিন্দা

খবর বিজ্ঞপ্তি |
০১:২৭ এ.এম | ১২ অক্টোবর ২০২৫


খুলনা মেডিকেল কলেজ-খুমেক হাসপাতাল পরিচালক স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হাসপাতালের ইনডোর বা আউটডোর বিভাগে পরিচালকের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো মিডিয়া প্রতিনিধি প্রবেশ, ছবি ধারণ বা রোগী ও স্বজনদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবেন না। এঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অবিলম্বে স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য হুমকি স্বরূপ ও অনিয়ম-দুর্নীতিবাজদের আশকারামুলক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের সাথে সাথে খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. কাজী আইনুল ইসলামকে অপসারণের জোর দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
কেসিআরএ : খুলনা ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন-কেসিআরএ গতকাল শনিবার এই নির্দেশনার প্রতি তীব্র উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জনগণের সেবার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম গণমাধ্যমের নজরদারির বাইরে রাখার এই উদ্যোগ গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গণমাধ্যম শুধুমাত্র তথ্য প্রচারের মাধ্যম নয়, এটি জনস্বার্থ রক্ষার শক্তিশালী হাতিয়ার। চিকিৎসাসেবা, ব্যবস্থাপনা ও দায়বদ্ধতার প্রশ্নে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ সীমিত করা জনগণের তথ্য জানার সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণœ করবে।
কেসিআরএ মনে করে, হাসপাতালের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার কথা বলে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। সাংবাদিকরা সবসময় পেশাগত নীতিমালা ও মানবিক মর্যাদা রক্ষা করে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। হাসপাতালের কর্মকান্ড স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাখতেই গণমাধ্যমের উপস্থিতি অপরিহার্য।
কেসিআরএ নেতৃবৃন্দ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে জনস্বার্থ, স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অক্ষুণœ রাখতে প্রশাসন ও গণমাধ্যমের মধ্যে সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার পরিবেশ সৃষ্টির আহবান জানাচ্ছে।
বিবৃতিদাতারা হলেন এসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন আহমেদ, সহ-সভাপতি নূর হাসান জনি ও শিশির রঞ্জন মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক আহমদ মুসা রঞ্জু, যুগ্ম-সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নূর ও আনিছুর রহমান কবির, কোষাধ্যক্ষ কামরুল হোসেন মনি, দপ্তর সম্পাদক জয়নাল ফরাজী, কার্যনির্বাহী সদস্য বিমল সাহা, ইয়াছিন আরাফাত রুমি ও রকিবুল ইসলাম মতি প্রমুখ।
কেটিআরইউ : অনুরুপ বিবৃতি দিয়েছেন খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটি-কেটিআরইউ নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ কাজী মোঃ আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ৯ অক্টোবর একটি অফিস আদেশে বলা হয়েছে, পরিচালকের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো মিডিয়া প্রতিনিধি হাসপাতালের ইনডোর বা আউটডোর বিভাগে প্রবেশ, ছবি ধারণ অথবা রোগী ও স্বজনদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবেন না।
খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটি মনে করে, এ আদেশ গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি এক প্রকার হুমকি। এটি শুধু সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করবে না, বরং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হবে, যা একটি গণতান্ত্রিক সমাজে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সাংবাদিকরা সব সময় জনস্বার্থে তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করে থাকেন। যদি কোনো ব্যক্তি সাংবাদিকতার নীতিমালা লঙ্ঘন করেন কিংবা অপসাংবাদিকতায় লিপ্ত হন, তবে সেই ব্যক্তি বা ঘটনার বিরুদ্ধে নির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু পুরো পেশাজীবী স¤প্রদায়কে একক আদেশে সীমাবদ্ধ করা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার শামিল।
খুলনা টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোস্তফা জামাল পপলু, সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম মতি, কোষাধ্যক্ষ বেল্লাল হোসেন সজল-সহ সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে এই একপাক্ষিক ও গণবিরোধী নির্দেশনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
পেশাজীবী সাংবাদিক সুরক্ষা মঞ্চ খুলনা : অনুরুপ বিবৃতিতে পেশাজীবী সাংবাদিক সুরক্ষা মঞ্চ খুলনার আহবায়ক এস এম হাবিব ও সদস্য সচিব মোঃ হেদায়েৎ হোসেন মোল্লাসহ নেতৃবৃন্দ এই আদেশে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। উক্ত আদেশ গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং সুষ্ঠু, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার প্রতি এক প্রকার হুমকি। এ আদেশ শুধু সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করবে না, বরং জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের প্রবাহও বাধাগ্রস্ত করবে, যা একটি গণতান্ত্রিক সমাজে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। নেতৃবৃন্দ এই নির্দেশনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এই আদেশ প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ