খুলনা | মঙ্গলবার | ১৪ অক্টোবর ২০২৫ | ২৯ আশ্বিন ১৪৩২

মিরপুরে পোশাক কারখানা ও কেমিক্যাল গুদামে আগুনে দগ্ধ হয়ে নিহত ৯

খবর প্রতিবেদন |
০৩:৫৭ পি.এম | ১৪ অক্টোবর ২০২৫


রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে প্রিন্টিং কারখানা এবং কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনায় ৯ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এছাড়া এ ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি দগ্ধ রয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আগুনের ঘটনায় নয়জন নিহত হয়েছেন। সদর দপ্তর থেকে একটি সার্চিং টিম পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে সার্চ করার জন্য। এই বিষয়ে এই মুহূর্তে আর বিস্তারিত তথ্য আমাদের কাছে নেই। পরে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, এখন পর্যন্ত আমরা ৯ জনের মরদেহ পেয়েছি। আমরা ধারণা করছি কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনে যে বিস্ফোরণ হয় তখন বিষাক্ত গ্যাস বের হয়, এতে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

প্রথম ইউনিটগুলোর ফায়ার ফাইটাররা আমাদের জানিয়েছেন, তারা এসে প্রথমে দেখেছেন অনেকেই ভবন থেকে বের হয়ে যেতে পেরেছে। আর যারা বিস্ফোরণের পর নিঃসৃত বিষাক্ত গ্যাসের কারণে বের হতে পারেননি তারাই ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে মারা যান। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আমরা বিস্তারিত তদন্ত করে জানতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের সার্চিং অপারেশন এখনো চলমান রয়েছে। কেমিক্যাল গোডাউনটির ভেতরে এখনো আগুন জ্বলছে। ভবনটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ সে কারণে ফায়ার ফাইটারদেরও আমরা ভেতরে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিচ্ছি না। ওই ভবনে আমরা মানুষবিহীন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপাতত কার্যক্রম পরিচালনা করছি। কেমিক্যাল গোডাউনে থাকা কেমিক্যাল এখনো সম্পন্ন নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। আমরা সবাইকে বলবো ন্যূনতম ৩০০ গজের দূরে থাকবেন ওই ভবন থেকে নিরাপদে থাকবেন। আমরা সবাইকে বলছি যারা এখানে দায়িত্ব পালন করছেন তারা যেন কোনোভাবেই ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা না করেন।

আগুনের সূত্রপাত জানতে প্রশ্ন করা হলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মরদেহ গুলো কোথায় পাওয়া গিয়েছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা গার্মেন্টসের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলায় সার্চিং করে মরদেহগুলো পেয়েছি। তবে ভেতরে এখনো আমাদের সার্চিং অপারেশন চলমান রয়েছে। ঘটনাস্থলে আমাদের ১২ ইউনিট রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা নয়জনের মরদেহ পেয়েছি এবং একজনকে আহত অবস্থায় পেয়েছি।

কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক বা কোনো কর্মচারীকে পাওয়া গিয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক পক্ষ বা ওইখানে কর্মরত কাউকে আমরা খুঁজে পায়নি। পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের খুঁজছে কিন্তু কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।

কেমিক্যাল গোডাউনটির অনুমোদন ছিল কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গোডাউনটি দেখে বুঝা গেছে এটির হয়ত অনুমোদন নেই। তবে এই বিষয়ে আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারব যাচাই-বাছাইয়ের পর।

কেমিক্যাল গোডাউনে আর কেউ আছে কিনা জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল বলেন, এটা আমরা এখনো বলতে পারছি না আমাদের সার্চিং অপারেশন চলমান রয়েছে। তবে ভেতরে মরদেহ পড়ে থাকতেও পারে। গোডাউনটি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে আমরা কোনো ধরনের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছি না। কেমিক্যাল নিষ্ক্রিয় করা হবে তারপর আমরা সার্চিং অপারেশনে যাব।

এদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট বর্তমানে কাজ করছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কাছে আগুনের সংবাদ আসে। সংবাদ পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

্রিন্ট

আরও সংবদ