খুলনা | শুক্রবার | ১৭ অক্টোবর ২০২৫ | ১ কার্তিক ১৪৩২

অক্টোবরের মধ্যে জুলাই সনদের আইনিভিত্তি দিতে পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ দেবে কমিশন : আলী রীয়াজ

খবর প্রতিবেদন |
১১:২৬ পি.এম | ১৬ অক্টোবর ২০২৫


আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে সরকারকে পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ দেবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, শুক্রবার সব রাজনৈতিক দল সনদে স্বাক্ষর করবে। তবে কেউ চাইলে কমিশনের মেয়াদের মধ্যে পরবর্তী যেকোনো দিনেও স্বাক্ষর করতে পারবে। আশা করি সরকার সঠিক ও সুচারুরূপে এটি বাস্তবায়ন হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংসদ ভবনের এলডি হলে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের কর্মসূচি উপলক্ষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার একটি পর্যায়ে শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গত এক বছর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে যে সহযোগিতা পেয়েছি, এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ৮৪টি বিষয়ে একমত হয়েছে। কিছু বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রয়েছে। পরস্পরের মতভিন্নতা সত্ত্বেও একটি পর্যায়ে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের আলোচনা ও যোগাযোগ আরও হবে। সনদ বাস্তবায়নে যাতে কোনও ধরনের ব্যত্যয় না ঘটে, সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমরা মনে করি জুলাই আন্দোলনে সব পক্ষেরই ত্যাগ আছে।

সনদ এখানেই শেষ নয় জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও যোগাযোগ করবো। নতুন যাত্রায় সবাই অংশগ্রহণ করুন। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা সব করতে চাই। আমরা মনে করি যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতি আমাদের বিশেষ দায় রয়েছে।

কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, আগামীকাল অঙ্গীকারনামায় প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলো, কমিশনের সদস্য ও সর্বশেষ প্রধান উপদেষ্টাও স্বাক্ষর করবেন। সবাই মিলে জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের পর পরবর্তী ধাপে যেন অব্যাহত থাকে আমরা সে চেষ্টা করবো।

তিনি জানান, ৩ হাজার পৃষ্ঠার ৮ খণ্ডের স্মারক সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হবে। সর্বশেষ ভাষ্যও সবার হাতে দেওয়া হবে। সনদের একটি আইনি ভিত্তির বিকল্প নেই।

আইনি ভিত্তি না দিলে সনদে স্বাক্ষর না করার বিষয়ে এনসিপির বক্তব্যের বিষয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, তাদের বক্তব্য আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কারণ তারা জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা কমিশনের বৈঠকেও অংশগ্রহণ করেছেন। তাই তাদের বিষয়টিও আমরা দেখছি। আশা করি তারা স্বাক্ষর করতে আসবেন।

বড় রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর না করলে কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে সবাই নিজস্ব মতামত দেবেন। তারপরও দেশের স্বার্থে সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন বলে আশা করি। আমরা মনে করি সবার মতামত থাকলে আইনি ভিত্তি দেওয়া সম্ভব।

বিএনপি, জামায়াত ও বাম দলগুলোগুলোর আপত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, তারা কিছু বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন। আমরা ব্যাখ্যা দিয়েছি সনদে। ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও তারা আসবেন বলে বিশ্বাস করি।

সব দল সাইন না করলে ভবিষ্যৎ কী হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে উপনীত হয়েছি, যেখানে প্রতিটি দলের মতামত দেওয়ার সুযোগ ছিল। গণভোটেরও আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। এ বিষয়ে আগামী সংসদকেও কিছু গাঠনিক ক্ষমতা থাকতে হবে। এ দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ করবো।

সংবাদ সম্মেলন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘদিনের কার্যক্রম বিরল ঘটনা। জুলাই সনদ স্বাক্ষরই আমাদের সবচেয়ে বড় আয়োজন। সেখানে এ বিষয়ে একটি ডকুমেন্টারি দেখানো হবে।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি জুলাই সনদ মানুষের ভাগ্যে পরিবর্তন আনবে। তা নিয়ে কাজ করবো। আশা করি এর মধ্য দিয়ে একটি উৎসবমুখর নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। স্বাক্ষর অনুষ্ঠান যেন আমাদের স্মৃতিতে ভাস্বর হয়, সে প্রত্যাশা করি।

ব্রিফিংয়ে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন– বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

্রিন্ট

আরও সংবদ