খুলনা | শনিবার | ১৮ অক্টোবর ২০২৫ | ৩ কার্তিক ১৪৩২

স্বর্ণালঙ্কার লুট করতে মা-মেয়েকে হত্যা করে তাদেরই আত্মীয়

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫৭ এ.এম | ১৮ অক্টোবর ২০২৫


ল²ীপুরের রামগঞ্জের জুলেখা বেগম (৫৫) ও তার কলেজপড়ুয়া মেয়ে তানহা আক্তার মীম (১৯) হত্যাকান্ডের ৯ দিন পর রহস্য উদঘাটন করছে পুলিশ। হত্যার দায় স্বীকার করেছে তাদের আত্মীয় পারভেজ। তাকে আদালতের মাধ্যমে পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অভিযুক্ত পারভেজ রামগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর মহাধর বাড়ির আব্দুল করিমের প্রবাস ফেরত ছেলে। সম্পর্কে নিহত জুলেখা তার মামি ও মীম মামাতো বোন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি স্পেশাল টিম অভিযান চালিয়ে পারভেজকে ঢাকা মেট্রোপলিটনের তুরাগ থানাধীন মনিরের গ্যারেজ থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত পারভেজ দুই মাস আগে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন। দেশে আসার পর অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়েন। অভাবের তাড়নায় পারভেজ তার মামার বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন পারভেজ একটি চাকু নিয়ে মামার বাড়িতে যান। মামি জুলেখা ও মামাতো বোন মীম তাকে আমড়া-আপেল খেতে দেন। এরপর মামাতো বোন মীমের সঙ্গে দ্বিতীয় তলায় যান। মীম হঠাৎ পারভেজের কাছে চাকু দেখে চিৎকার দেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মীমকে শরীরের বিভিন্ন স্থান ও গলায় চাকু দিয়ে আঘাত করে। এতে মিম মারা যায়। দ্বিতীয় তলা থেকে পারভেজ নেমে তার মামিকে বলে মীম আপনাকে উপরে ডাকছে। মামি কানে কম শোনেন। উপরে গেলে পেছন থেকে মাথায় প্লেট দিয়ে আঘাত করেন তাকে। লুটিয়ে পড়লে পারভেজ টি-টেবিল দিয়ে আঘাত করে তাকেও হত্যা করে। তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে আলমারি ভেঙে স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেন পারভেজ। তার গায়ের কাপড় খুলে ব্যাগে নেন। মামাতো ভাই রাব্বির প্যান্ট-গেঞ্জি পরে বের হয়ে যান। সঙ্গে থাকা জামাকাপড়ের ব্যাগটি রামগঞ্জের একটি খালে ফেলে দেন। পারভেজ তার মামার বাসা থেকে বের হওয়ার ১০/১৫ মিনিট পর মাগরিবের আজান হয়। হত্যাকান্ড সংঘটিত করে পারভেজ ল²ীপুরে তার শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ল²ীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের (২ নম্বর ওয়ার্ড) উত্তর চন্ডিপুর গ্রামের খামারবাড়িতে নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হন ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের স্ত্রী জুলেখা বেগম ও মেয়ে মীম। খবর পেয়ে ওই রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে পৃথকভাবে দুই জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠান। মা-মেয়ের হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহ এ পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

্রিন্ট

আরও সংবদ