খুলনা | রবিবার | ১৯ অক্টোবর ২০২৫ | ৪ কার্তিক ১৪৩২

কাতার-তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পাকিস্তান-আফগানিস্তান

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৭ পি.এম | ১৯ অক্টোবর ২০২৫


দীর্ঘদিনের উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। কাতার ও তুরস্কের যৌথ মধ্যস্থতায় দুই দেশ দোহায় এক জরুরি বৈঠকে বসে এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। রোববার (১০ অক্টোবর) ভোরে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

গতকাল শনিবার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছান। সেখানে কাতারের নেতৃত্বে এবং তুরস্কের সক্রিয় সহায়তায় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়। আলোচনায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাতার জানিয়েছে, এই যুদ্ধবিরতি যেন কার্যকর থাকে, সেজন্য দুই দেশ ভবিষ্যতে আবারও ফলোআপ বৈঠকে বসবে।

তালেবান ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা চলছিল। তবে গত দুই সপ্তাহে সেই উত্তেজনা রূপ নেয় সরাসরি সংঘর্ষে। সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত গোলাগুলি ও বিমান হামলার ঘটনায় পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এতে দুই দেশের বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা কয়েকশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই দোহা আলোচনায় আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। অন্যদিকে পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।

পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, আফগানিস্তানের ভেতর থেকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তাদের ওপর হামলা চালায় এবং কাবুল এসব গোষ্ঠীকে নীরব মদদ দিচ্ছে। প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে এসব গোষ্ঠীর কার্যক্রমে পাকিস্তান উদ্বিগ্ন। এসব হামলা বন্ধের দাবিতে কাবুলকে বহুবার সতর্কও করেছে ইসলামাবাদ।

এই প্রেক্ষাপটেই দুই সপ্তাহ আগে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের ওপর পাল্টা হামলা চালায় আফগান বাহিনী। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘাতের মধ্যেই গত সপ্তাহে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ৪৮ ঘণ্টার জন্য একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পাকিস্তান আবারও আফগান সীমান্তে বিমান হামলা চালায়। যদিও তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ তখন দাবি করেন, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, পাকিস্তান তখন নতুন করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

আফগানিস্তান শুরু থেকেই বলছে, তারা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় বা মদদ দেয় না। বরং পাকিস্তানই বারবার তাদের সীমান্তে আগ্রাসন চালাচ্ছে।

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গত শুক্রবার। আফগান সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় টিটিপি জঙ্গিরা। এতে সাতজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন। এই হামলার পর পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া ছিল কঠোর। পরদিনই তারা আবারও সীমান্তে সামরিক তৎপরতা চালায়। সূত্র: রয়টার্স

্রিন্ট

আরও সংবদ