খুলনা | সোমবার | ২০ অক্টোবর ২০২৫ | ৪ কার্তিক ১৪৩২

দীর্ঘ ৯ বছর ধরে সাতক্ষীরায় ডেপুটেশনে বাগেরহাট খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের প্রধান সহকারি খালেক

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
১১:৩১ পি.এম | ১৯ অক্টোবর ২০২৫


সাতক্ষীরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে একজন প্রধান সহকারি থাকা স্বত্বেও বাগেরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারি মোঃ আব্দুল খালেক ডেপুটেশনে (সংযুক্তিতে) প্রায় ৯ বছর ধরে সাতক্ষীরায় কর্মরত আছেন। খাদ্য অধিপ্তরের উর্দ্ধতন একজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ডেপুটেশনে থাকা প্রধান সহকারি মোঃ আব্দুল খালেক সাতক্ষীরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস নিয়ন্ত্রণ করেন। জেলার সব মিলারদের জিম্মি করে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। স¤প্রতি বাগেরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা অফিসের প্রধান সহকারি আব্দুল খালেককে তার বদলিকৃত কর্মস্থলে (বাগেরহাট) যোগদানের জন্য চিঠি প্রদান করলেও খাদ্য অধিদপ্তরের ওই উর্দ্ধতন কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তিনি সাতক্ষীরা অফিসে রয়েছে গেছেন। ফলে সাতক্ষীরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে এখন দুইজন প্রধান সহকারি কর্মরত রয়েছেন। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার পুঁইজালা গ্রামের আব্দুল খালেক ২০১৪ সালে উচ্চমান সহকারী হিসাবে খাদ্য বিভাগে চাকুরী নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে প্রধান সহকারী হিসাবে পদোন্নতি পেয়ে বাগেরহাট জেলায় যোগদান করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে খাদ্য অধিপ্তরের উর্দ্ধতন একজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে সংযুক্তিতে সাতক্ষীরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে ফিরে আসেন। সে সময় সাতক্ষীরা জেলা কার্যালয়ে একজন প্রধান সহকারী কর্মরত ছিলেন। এখনও তিনি সাতক্ষীর অফিসেই আছেন। তাকে হিসাব শাখায় দিয়ে অফিসের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন ডেপুটেশনে (সংযুক্তিতে) থাকা আব্দুল খালেক। প্রধান সহকারি আব্দুল খালেক তার খুঁটির জোর দেখিয়ে সংযুক্তিতে থাকা তৎকালীন আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (আরসিফুড) ম্যানেজ করে সাতক্ষীরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের হিসাব রক্ষক নুরে আলমকে সংযুক্তিতে খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে পাঠান। একই ভাবে তিনি নিজে প্রায় ৯ বছর ধরে সংযুক্তিতে সাতক্ষীরায় রয়েছেন। 
এদিকে একই অফিসে দুইজন প্রধান সহকারী কিভাবে থাকেন এটা নিয়ে সাধারণ মিলারদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আব্দুল খালেক প্রভাব খাটিয়ে পুরো অফিসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সবাইকে জিম্মি করে রেখেছেন। এখানে যে কর্মকর্তা আসেন না কেন তাকে খালেকের কথা শুনে চলতে হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। পরিবহন বিল বাবদ শতকরা ৩৩ শতাংশ এবং অন্যান্য বিল হতে ১০ শতাংশ না দিলে তিনি বিল ছাড়েন না। যে কারণে সাধারণ মিলাররা তার কাজে মোটেও সন্তুষ্ট নয়। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মিলার জানান, প্রধান সহকারী না থাকায় দাপ্তরিক কাজ চালানো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে উলে­খ করে সাতক্ষীরা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে সংযুক্তিতে থাকা আব্দুল খালেককে ফেরত চেয়ে ২০২৪ সালের ২১ মে বাগেরহাট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ২৭৪ নং স্মারকে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক বরাবর একটি পত্র দেন এবং পরিচালক প্রশাসন বরাবর অনুলিপি প্রদান করেন। কিন্তু তৎকালীন আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রককে ম্যানেজ করে আব্দুল খালেক এখনও সাতক্ষীরা জেলায় আছেন। দীর্ঘদিন এক অফিসে থাকার সুযোগে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। এভাবে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তিনি ৬৫ লাখ টাকা দিয়ে সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান কলেজ এলাকায় বাড়ি কিনেছেন। কিনেছেন একাধিক প্লট। তিনি প্রধান সহকারি আব্দুল খালেকের সংযুক্তি আদেশ বাতিলপূর্বক মূ কমস্থলে যোগদানের ব্যবস্থা গ্রহণে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এবিষয় সাতক্ষীরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে সংযুক্তিতে থাকা প্রধান সহকারি আব্দুল খালেক বলেন তিনি ২০১৮ সাল থেকে এই অফিসে কর্মরত আছেন। তার স্ত্রী সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার একটি সরকারি প্রাইমারী স্কুলে চাকুরী করায় তিনি এখানে রয়েছেন। তবে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। 

্রিন্ট

আরও সংবদ