খুলনা | সোমবার | ২০ অক্টোবর ২০২৫ | ৫ কার্তিক ১৪৩২

জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদ হত্যা: সেই ছাত্রীর প্রেমিক অভিযুক্ত মাহিরকে থানায় দিলেন মা

খবর প্রতিবেদন |
০৪:৩৫ পি.এম | ২০ অক্টোবর ২০২৫


রাজধানীর আরমানিটোলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মো. জোবায়েদ হোসেনের হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মাহির রহমানকে তার মা নিজেই পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন।

আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) ভোরে তিনি ছেলেকে নিয়ে বংশাল থানায় হাজির হয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে খুন হন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ‘রওশন ভিলা’ নামের একটি বাড়ির সিঁড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাস্থল থেকে দুজন তরুণকে পালিয়ে যেতে দেখা গেলেও তাদের মুখ স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত জুবায়েদ ছিলেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার নূরবক্স লেনের ‘রৌশান ভিলা’ নামের একটি বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি বিষয় পড়াতেন। এ ছাত্রীর বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন। সেই বাসারই তিন তলায় গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে জুবায়েদকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে সিঁড়ির উপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তিন তলার সিঁড়ি থেকে নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিলো রক্ত।

এই ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে যে তথ্য পেয়েছে তা অনুযায়ী, জুবায়েদের এই মৃত্যু কোনো পারিবারিক দ্বন্দ্ব বা ছিনতাই নয়, বরং এটি প্রেমঘটিত দ্বন্দ্বের জের ধরে ঘটে থাকতে পারে।

পুলিশ জানিয়েছে, বর্ষা ও মাহির রহমান নামের এক যুবকের মধ্যে দীর্ঘ ৯ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাহির বুরহান উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী এবং বর্ষা ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। ছোটবেলা থেকেই তারা পাশাপাশি বাড়িতে বড় হয়েছেন এবং তাদের সম্পর্ক চতুর্থ শ্রেণি থেকে গড়ে ওঠে।

কিন্তু কিছুদিন আগে বর্ষা মাহিরকে জানায়, সে তার টিউটর জুবায়েদকে পছন্দ করতে শুরু করেছে। যদিও পুলিশ নিশ্চিত করেছে, জুবায়েদ ও বর্ষার মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না এবং কোনো প্রকার প্রেমমূলক বার্তা বা আলাপ পাওয়া যায়নি। এরপরও বর্ষার এই কথায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মাহির। পুলিশের ধারণা, মাহির তার এক বন্ধু নাফিসকে সঙ্গে নিয়ে রাগের বশে জুবায়েদকে হত্যা করে থাকতে পারে।

এই ঘটনার পর পুলিশ বর্ষাকে রবিবার রাত ১১টার দিকে তার বাসা থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা স্বীকার করেছে, সে মাহিরকে জুবায়েদকে পছন্দ করার কথা বলেছিল, তবে খুনের বিষয়ে সে কিছু জানে না। বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বাভাবিক ও চিন্তামুক্ত দেখা গেছে বলেও জানান ওসি।

্রিন্ট

আরও সংবদ