খুলনা | মঙ্গলবার | ২১ অক্টোবর ২০২৫ | ৫ কার্তিক ১৪৩২

নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম : চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্ব কাম্য

|
১২:১৪ এ.এম | ২১ অক্টোবর ২০২৫


সাম্প্রতিককালে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকান্ড নিয়ে যে প্রশ্ন ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য এক গভীর উদ্বেগের বিষয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর তালিকাভুক্তি-প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইসির নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, সীমানা পুননির্ধারণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যাকে গুরুত্ব দেওয়া হলেও বিভিন্ন আসনের মধ্যে জনসংখ্যায় ১৫৩ শতাংশ এবং ভোটার সংখ্যায় ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বিশাল ব্যবধান রয়ে গেছে। এর ফলে ভৌগোলিক অখন্ডতা রক্ষার মূলনীতি ব্যাহত হচ্ছে, যা জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। ফলে, ২০টিরও বেশি আসনের সীমানা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে অন্তত ২৭টি রিট আবেদন জমা পড়েছে, যা ইসির ওপর আইনি চাপ সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগে এসব রিট নিষ্পত্তির দায় স্বাভাবিকভাবেই ইসির ওপর বর্তেছে।
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের খুব কাছে এসেও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও জটিলতা কমেনি। দেখা যাচ্ছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয় লীগ’ কিংবা ‘জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাজাহান সিরাজ)’-এর মতো নিষ্ক্রিয় বা অস্তিত্বহীন কেন্দ্রীয় কার্যালয়বিশিষ্ট দলগুলোকে প্রাথমিক তালিকায় রাখা হয়েছে, যা ইসির তদন্ত প্রক্রিয়ার দুর্বলতাকেই নির্দেশ করে। অপরদিকে, ‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে এনসিপি’র সঙ্গে ইসির বিপরীতমুখী অনড় অবস্থানও অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক তৈরি করছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ইসি বর্তমানে যে অধিকতর তদন্ত করাচ্ছে, তা ইতিবাচক হলেও শুরুতেই এ সংক্রান্ত বিষয়ে কঠোর মানদণ্ড অনুসরণ করা উচিত ছিল বলে মনে করি আমরা।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সবকিছু যাচাই-বাছাই করে প্রভাবমুক্তভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি করলেও মাঠ পর্যায়ের চিত্র কিন্তু ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে কমিশনের প্রতিটি পদক্ষেপে তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা, নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা অপরিহার্য। কারণ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসিকে তার কার্যক্রমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই হবে। এ অবস্থায় জনগণের আস্থা অর্জনে ইসিকে দ্রুত আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় কঠোরতাসহ সব ধরনের বিতর্ক এড়িয়ে দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। যেহেতু সময় কম, ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতিতে আর কোনো শিথীলতা কাম্য নয়। নির্বাচন কমিশন বিষয়গুলো নিষ্পত্তিতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

্রিন্ট

আরও সংবদ