খুলনা | মঙ্গলবার | ২১ অক্টোবর ২০২৫ | ৬ কার্তিক ১৪৩২

দীপাবলির আতশবাজিতে বিষাক্ত ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন নয়াদিল্লি, দমবন্ধ পরিস্থিতি

খবর প্রতিবেদন |
০২:৩৫ পি.এম | ২১ অক্টোবর ২০২৫


দীপাবলির আতশবাজির পরদিন ঘন বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে শহরের বাতাসে দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরাপদ সীমার বহু গুণ বেশি রেকর্ড করা হয়েছে।

একইসঙ্গে ঘন ধোঁয়াশার জেরে দৃশ্যমানতাও নেমে এসেছে বিপজ্জনক পর্যায়ে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি মঙ্গলবার ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে। হিন্দুদের দীপাবলি উৎসবে লাখো মানুষ আতশবাজি ফুটিয়ে যে উচ্ছ্বাসে মেতেছিল, তার পরদিনই শহরজুড়ে বায়ুদূষণ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছায়।

মূলত সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত আতশবাজি ফোটানোর পর ধোঁয়া ও সূক্ষ্ম কণায় ছেয়ে যায় দিল্লির আকাশ। আর এতে করে দিল্লির বাতাসের মান বিপর্যস্ত হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৩৫০-এর ওপরে উঠে যায়। আর এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ডে “অত্যন্ত গুরুতর” ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর বলে বিবেচিত।

এছাড়া ধোঁয়ার ঘন চাদরে শহরের অনেক এলাকায় দৃশ্যমানতাও কমে যায়। রাস্তা, ভবন, এমনকি ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোও ধূসর কুয়াশায় হারিয়ে যায়। বেদান্ত পাচকান্দে নামে এক পর্যটক বলেন, “আমি এর আগে এমনটা কখনও দেখিনি। দূষণের কারণে সামনে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।”

গত সপ্তাহে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত দিল্লিতে দীপাবলির সময় আতশবাজি নিষিদ্ধের ওপর কিছুটা ছাড় দেয়। সীমিত পরিসরে ‘সবুজ আতশবাজি’ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। কারণ সাধারণ আতশবাজির তুলনায় এগুলো প্রায় ৩০ শতাংশ কম দূষণ সৃষ্টি করে।

আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, শনিবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ে এগুলো ব্যবহার করা যাবে। তবে আগের মতোই বেশিরভাগ মানুষ সেই নির্দেশনা মানেনি।

নয়াদিল্লি ও তার আশপাশের মেট্রোপলিটন অঞ্চলে ৩ কোটি মানুষ বাস করে এবং প্রতি বছর শীতকালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় উঠে আসে দিল্লি। মূলত দীপাবলির আতশবাজির ধোঁয়া, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং আশপাশের রাজ্যগুলোতে কৃষকদের ফসলের খড় পোড়ানোর ধোঁয়া মিলেই বায়ুদূষণ ভয়াবহ রূপ নেয়।

এছাড়া বায়ুদূষণ কমাতে দিল্লি প্রশাসন নির্মাণকাজে বিধিনিষেধ, ডিজেলচালিত জেনারেটর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞাসহ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে পরিবেশবিদদের মতে, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও যানবাহন থেকে ধোঁয়া নির্গমন নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

এমনকি সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ুদূষণের কারণে ভারতে সূর্যালোকের পরিমাণও কমে যাচ্ছে।

বানারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মনোজ কে. শ্রীবাস্তব বলেন, সূর্যালোক কমে যাওয়া শুধু সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনেই নয়, কৃষি উৎপাদন, স্থানীয় পরিবেশ এবং মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ