খুলনা | বুধবার | ২২ অক্টোবর ২০২৫ | ৬ কার্তিক ১৪৩২

ঘাতক মা গ্রেফতার

সাতক্ষীরার তৃতীয় সন্তানও কন্যা হওয়ায় পাঁচ দিনের শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
০৪:৫৩ পি.এম | ২১ অক্টোবর ২০২৫


সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ছেলের প্রত্যাশায় তৃতীয় সন্তানও কন্যা শিুশু মা তার নিজের পাঁচ দিন বয়সের কন্যা শিশুকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে কলারোয়া উপজেলার ৯ নম্বর হেলাতলা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ স্থানীয় কাজিরহাট হাই স্কুলের পাশে খালের পানিতে কচুরিপানার ভেতর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ ঘাতক মা শারমিন সুলতানা(২৬) কে গ্রেফতার করেছে।

আটক শারমিন সুলতানা সাতক্ষীরার কলারেয়া উপজেলার ৯ নম্বর হেলাতলা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মো. ইব্রাহিম খলিলের স্ত্রী।

পুলিশ জানায়, সোমবার বেলা সাড়ে তিনটা থেকে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শিশুটির পিতা ইব্রাহিম খলিল বাড়িতে এসে বাচ্চাটিকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এসময় শিশুটির মা শারমিন সুলতানা তার সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে ঘুমান্ত অবস্থায় তার পাশ থেকে কেউ তুলে নিয়ে হত্যা করেছে এমন অভিযোগ তোলেন। একপর্যায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশুটির পিতা ইব্রাহিম খলিল কলারোয়া থানায় আসেন একটি সাধারণ ডায়েরি করার জন্য। এসময় তিনি বলেন, তার কন্যা শিশুকে নিয়ে মা শারমিন বিকালে ঘুমিয়ে ছিলো। ঘন্টাখানিক পরে দেখে শিশুটি নেই।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সাইফুল ইসলাম জানান, শিশুর পিতা ইব্রাহিম খলিলের কথা অসংলগ্ন ও সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমরা (পুলিশ) তাকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থালে গিয়ে শিশুর মা শারমিনের সাথে কথা বলি ও জিজ্ঞাসাবাদ করি। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন যে, তাদের ৫ বছর ও দেড় বছর বয়সী দুইটি কন্যা শিশু আছে। এবার তাদের একটি ছেলে সন্তানের আশা ছিল। কিন্তু দুই কন্যার পর আবারো একটি কন্যা হওয়ায় তাকে পার্শ্ববর্তী খালের পানিতে কচুরিপানার মধ্যে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, পরে সোমবার রাত ১১ টার দিকে ডিবি ও কলারোয়া থানা পুলিশ ঘাতক মা শারমিন সুলতানার দেয়া তথ্য মতে স্থানীয় কাজিরহাট হাই স্কুলের পিছনে খালের পানিতে কচুরিপানার মধ্যে থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় শিশুটির পিতা ইব্রাহিম খলিলের মা কলারোয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের সুফিনুর রহমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুন বাদী হয়ে বৌমা শারমিন সুলতানার নামে কলারোয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা সরদার মুনসুর আলী জানান, ৫দিন আগে কলারোয়ায় শারমিনের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে কন্যা শিশুটির জন্ম হয়। সোমবার শেষ বিকালে থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিলো না বলে শিশুর মা-বাবা জানায়। তবে তাদের আচরণ ছিলো সন্দেহজনক। রাতে থানা পুলিশ, ডিবি, পিবিআই এসে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে শারমিনের দেয়া তথ্যমতে পাশের খালের কচুরিপনা মধ্য থেকে মৃত অবস্থায় কন্যা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সাইফুল ইসলাম ঘটনার আরো জানান, এ ঘটনায় শিশুটির মা শারমিন সুলতানাকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতেদর মাধ্যমে তাকে সাতক্ষীরা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। মৃত শিশুর ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, ‘শিশুর পিতা ইব্রাহিম খলিলের আদি বাড়ি শ্যামনগরে। তিনি রঘুনাথপুরে ঘরজামাই থাকতেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ