খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | ৭ কার্তিক ১৪৩২

কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি

জুলাই সনদকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে : জামায়াত

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৩ এ.এম | ২৩ অক্টোবর ২০২৫


প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে কাদের কাদের নিয়ে এই আপত্তি, তাঁদের নাম প্রকাশ করেনি দলটি।
বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা উপদেষ্টা, তাদের ব্যাপারে বলেছি, সকলের ব্যাপারে নয়। আমরা বলেছি, কিছু কিছু লোক আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) বিভ্রান্ত করে। আপনার প্রতি আমাদের আস্থা আছে। কিন্তু আপনার কিছু লোক আপনার পাশে আপনাকে বিভ্রান্ত করে এবং ওরা কোনো একটা দলের পক্ষে কাজ করে আমরা মনে করি। তাদেরকে, তাদের ব্যাপারে আপনাকে হুঁশিয়ার থাকা দরকার।’
একদিন আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপিও কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। নাম উল্লেখ না করে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আহŸান জানিয়েছিল দলটি।
বৈঠকে কোনো উপদেষ্টার অপসারণের দাবি তুলেছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা প্রথম দিন দৃষ্টি আকর্ষণ করছি...আমরা প্রথম দিন যাইয়াই অপসারণ চাইনি। আমরা বলছি, আমরা এখন দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা সময় দিচ্ছি। আপনাকেও শুনতে দিচ্ছি। যদি না হয় তাহলে আমরা যা যা করার, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা চিন্তা করব।’
তত্ত¡াবধায়ক সরকারের কোনো দাবি তোলা হয়নি জানিয়ে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের ব্যাপারে এখনো সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হচ্ছে। তাঁর দল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় আছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোনো ব্যত্যয় না হলে অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত¡াবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করবে বলেও আশাবাদ জানান তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা কী বলেছেন, এমন প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলছেন যে উনি এগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করছেন এবং যেটা করতে হবে, সেটি উনি করবেন, ইনশাআল্লাহ।’
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, নভেম্বর মাসের শেষ দিকে গণভোট এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়নের জন্য ‘এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল এ্যারেঞ্জমেন্ট’ জারির বিষয়ে আলোচনা হয় বলেও সাংবাদিকদের জানান আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। বৈঠকে তিনি জামায়াতে ইসলামীর চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করায় প্রধান উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানিয়েছেন জামায়াতকে। বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে প্রধান দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন জানিয়ে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা আজকে (বুধবার) এটা (জুলাই সনদ) বাস্তবায়নের জন্য ওনার (প্রধান উপদেষ্টা) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। উনি আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন যে এটা বাস্তবায়ন যদি না হয়, তাহলে এই পরিশ্রম তো পণ্ডশ্রম ছাড়া কিছু নয়। তো সে কারণে উনি বলেছেন, আমি যথাযথ উদ্যোগ নেব।’
‘একটি আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে’ প্রধান উপদেষ্টাকে এমন কথা বলেছে জামায়াত। দলটির নায়েবে আমির বলেন, ‘এটা কনস্টিটিউশন (সংবিধান) নয়। এটা হচ্ছে এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল এ্যারেঞ্জমেন্ট, যেটা কোনো সরকার এ রকম (অভ্যুত্থান বা বড় পরিবর্তন) একটি পরিস্থিতিতে পড়লে দেওয়ার এখতিয়ার রাখে। এবং উনি (প্রধান উপদেষ্টা) আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন যে একটা আদেশের মাধ্যমে এইটা হবে।’
জুলাই সনদের বিষয়ে অধ্যাদেশ জারির কথা কেউ কেউ বললেও তাতে ভিন্নমত রয়েছে জামায়াতের। এই অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘অধ্যাদেশ খুব দুর্বল। এগুলোর সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার মতো স্ট্রেংথ (ক্ষমতা) অধ্যাদেশে নেই। কিন্তু আদেশ ইজ ইকুইভেলেন্ট (সমান) টু সাংবিধানিক পরিবর্তন পাওয়ার (ক্ষমতা) এবং অথরিটির দিক থেকে। আমরা আমাদের এক্সপার্ট কমিটির সঙ্গে বসেছি। আমাদের এক্সপার্ট কমিটি আবার ঐকমত্য কমিশনের এক্সপার্ট কমিটির সঙ্গে বসেছে। সবাই এই পরামর্শ দিয়েছেন যে একটি আদেশের মাধ্যম এটাকে বৈধতা দিতে হবে। আর সেই আদেশের ওপরেই গণভোট হবে। আমরা এটা ক্লিয়ারলি (পরিষ্কার) বলে আসছি। উনি আমাদের কথায় কনভিন্স (রাজি) হয়েছেন বলে আমাদের মনে হয়। আমরা আশা করি, সেদিকে যাবে।’

্রিন্ট

আরও সংবদ