খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | ৭ কার্তিক ১৪৩২

অপরাধীকে গালি দেন, সেনাবাহিনীকে নয় : আমান আযমী

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৫ এ.এম | ২৩ অক্টোবর ২০২৫


সেনাবাহিনীকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, সংহতি ও ঐক্যের প্রতীক উল্লেখ করে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা মানে নিজেদের ক্ষতি করা। সব অপরাধীকে গালি দেন, দয়া করে সেনাবাহিনীকে গালি দেবেন না।’
তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করতে চায়। জনগণ সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হলে অসাধু ও দুর্নীতিপরায়ণ কিছু কর্মকর্তার জন্য দেশের ক্ষতি হবে, আমার-আপনার ক্ষতি হবে।’
বুধবার (২২ অক্টোবর) মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 
এদিন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে কিছু প্রস্তাবনার কথা তুলে ধরে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সংগঠন ইউনাইটেড ফর দ্য ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস (ইউভিইডি)। সংগঠনটির সদস্যদের সঙ্গে গুমের শিকার সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহিল আমান আযমীও ছিলেন।
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, ‘১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অ্যাচিভমেন্ট। আমি চিফ প্রসিকিউটরকে হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা যারা গুম হয়েছিলাম, আমাদের ওপর যে নির্মম নির্যাতন চলেছে, আজ আমরা কিছুটা হলেও তৃপ্তি পাচ্ছি। আমাদের ওপর যে ঝড় গেছে, এর কিছুটা হলেও সান্ত¡না পাচ্ছি।’
এসময় তিনি গ্রেফতার সেনাসদস্যদের সুবিচার দাবি করে বলেন, ‘আদালত সব বক্তব্য শুনে যেন সুবিচার করেন, সেটাই আমি চাইবো। আমি চাই না তাদের প্রতি কোনো অবিচার হোক। যে যতটুকু করেছে, তার ততটুকু পাওনা সে যেন পেয়ে যায়।’
নিজের দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্টের কথা তুলে ধরে আমান আযমী বলেন, ‘আমি আজ সকালে (ফেসবুকে) একটি স্ট্যাটাস দিয়েছি, এজন্য আমি ফেসবুকে হাজার হাজার মানুষের গালি খাচ্ছি। আমি সেনাবাহিনীকে কেন ডিফেন্ড করতে চাই?’
তিনি বলেন, ‘এই যে ২৫ জনের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে, তাদের একজনের বিরুদ্ধেও কিন্তু সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ কোনো অপরাধের কারণে ওয়ারেন্ট হয়নি। তারা সেনাবাহিনীর বাইরে এসে, সেনাপ্রধানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এসে এই অপরাধগুলো করেছে। এ সংখ্যাটা কিন্তু সেনাবাহিনীর হাজার ভাগের এক ভাগও নয়।’
আযমী বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানে ৯৯৯ জন ভালো, একজন খারাপ; তার জন্য বদনাম রটানো কুৎসা রটানো দেশপ্রেমিকের কাজ নয়। আপনাদের জেনে রাখতে হবে যে, এই সেনাবাহিনী সবসময় জাতির পাশে ছিল। গত বছরের ৫ আগস্টেও যদি সেনাবাহিনী পাশে না থাকতো তাহলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হতো সেটি চিন্তা করা যায় না।’
গুমের শিকার হয়ে নিজেও মামলা করেছেন সাবেক এই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। সেই তথ্য তুলে ধরে আমান আযমী বলেন, ‘আমি সেনা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা আইনি প্রক্রিয়া সহজ ও সুন্দরভাবে চলতে সহায়তা করছে। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং সেনা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এখনো যাদের ধরা যায়নি, তাদের আনার ব্যাপারে বলা হয়েছে। আমিও আবার বলছি, সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা উচিত। যারা পলাতক তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।’
দেশবাসী যেন ভবিষ্যতে আর কোনো স্বৈরাচার না দেখেন, সেই প্রত্যাশা তুলে ধরেন সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা।

্রিন্ট

আরও সংবদ