খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৫ | ৮ কার্তিক ১৪৩২

সৌদি আরবের নতুন গ্রান্ড মুফতি শেখ সালেহ আল-ফাওযান

খবর প্রতিবেদন |
০২:০৫ পি.এম | ২৩ অক্টোবর ২০২৫


সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় পদ গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পেলেন শেখ সালেহ বিন ফাওজান আল-ফাওজান। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে জানানো হয়, বাদশাহ সালমান তার ছেলে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সুপারিশে ৯০ বছর বয়সি এই আলেমকে ‘গ্র্যান্ড মুফতি’ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

আল-কাসিম প্রদেশে জন্ম নেওয়া শেখ সালেহ ছোটবেলাতেই বাবা হারান এবং স্থানীয় এক ইমামের কাছে কোরআন শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরে তিনি নূর আলা আল-দারব (আলোয় পথচলা) রেডিও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচিতি পান। এ ছাড়া টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও ইসলামী গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন।

তবে তার কিছু বক্তব্য অতীতে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ সালেহ শিয়া মুসলিমদের ‘শয়তানের ভাই’ বলে উল্লেখ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ইরানের সঙ্গে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সময় সৌদি আলেমদের এমন মন্তব্য আগে থেকেও শোনা গেছে। তিনি ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন, বিশেষত যখন তারা সৌদি আরবের পবিত্র স্থানগুলোর দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।

২০১৬ সালে তিনি জনপ্রিয় গেম ‘পোকেমন গো’ নিষিদ্ধ করার ফতোয়া দিয়েছিলেন, একে তিনি জুয়ার সমতুল্য বলে মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে সৌদি সরকার নিনটেন্ডো ও গেম নির্মাতা নিয়ানটিক কোম্পানিতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে।

২০০৩ সালে শেখ সালেহ এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘দাসপ্রথা ইসলামের অংশ, জিহাদের অংশ, আর যতদিন ইসলাম থাকবে, ততদিন জিহাদও থাকবে।’ তিনি তখন ‘জিহাদ’ শব্দটির আধ্যাত্মিক অর্থ ‘আন্তরিক আত্মসংগ্রাম’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন।

শেখ সালেহ গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে শেখ আব্দুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল-শেখের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। শেখ আব্দুল আজিজ প্রায় ২৫ বছর এই পদে ছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আল-শেখ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে গ্র্যান্ড মুফতির পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। এই পরিবারের পূর্বপুরুষ শেখ মোহাম্মদ ইবনে আবদুল-ওয়াহাবের শিক্ষা থেকে উদ্ভূত ‘ওয়াহাবি’ মতবাদ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সৌদি রাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করেছে।

বিশ্বজুড়ে সুন্নি মুসলিমদের কাছে সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতির পদটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। মক্কা ও মদিনার মতো ইসলাম ধর্মের দুই পবিত্র নগরীর রক্ষক দেশ হওয়ায়, এই পদধারীর ফতোয়া ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

্রিন্ট

আরও সংবদ