খুলনা | মঙ্গলবার | ২৮ অক্টোবর ২০২৫ | ১৩ কার্তিক ১৪৩২

রামপুরা-খিলগাঁওয়ে গুলিতে চারজন হতাহতের মামলা

‘লাশ গুলিবিদ্ধ, ঢাকায় দাফন করা যাবে না শর্ত দেয় পুলিশ’

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৮ এ.এম | ২৮ অক্টোবর ২০২৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও খিলগাঁওয়ে গুলি করে দু’জনকে হত্যা এবং দু’জনকে আহত করার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য দিয়েছেন শিশু জুলাইযোদ্ধা মুসার বাবা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। পুলিশের ছোঁড়া গুলি শিশুটির মাথা ভেদ করে তার দাদী মায়া ইসলামের পেটে বিদ্ধ হয়। এতে শিশুটির দাদি মারা যান। 
সাক্ষীর জবানবন্দিতে নিহতের ছেলে ও রামপুরার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার মা (গুলিবিদ্ধ হয়ে) হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর পুলিশ ঢাকায় দাফন পর্যন্ত করতে দেয়নি। তারা শর্ত দেয়, লাশ নিয়ে রামপুরায় যাওয়া যাবে না।’
সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করছেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
সাক্ষীর জবানবন্দিতে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির ব্যবসা করি। আমার একটি দোকান আছে। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই (শুক্রবার) আনুমানিক বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার সময় আমার বাবাকে খাবার পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমার ছেলে মোঃ বাসিত খান মুসা (৬) আইসক্রিম খেতে চায়। তখন আমি আমার মা ও আমার ছেলেকে নিয়ে বাসার নিচে নামি। মাকে বলি—আইসক্রিম কিনে দেওয়ার পর আমার ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যাবে। বাসার নিচে নামার পর গেটের বাহির থেকে পুলিশের ছোড়া একটি গুলি আমার ছেলের মাথায় লেগে মাথা ভেদ করে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়।’ ‘তাৎক্ষণিকভাবে আমি আমার ছেলেকে কোলে করে পার্শ্ববর্তী ফেমাস হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার বাসা থেকে আনুমানিক ৭০ ফিট দূরে রামপুরা থানা ভবন অবস্থিত। আমি আমার বাসার গেট থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম- ঐ থানার ওসি মশিউর রহমানসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সরাসরি গুলি করছিল। ফেমাস হাসপাতালের ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত আমার ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। আমি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে আমরা হাসপাতালে পৌঁছাই। এরপর ফোন করলে আমার বাবা ও স্ত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসে। আমার ছেলের মাথায় ডাক্তাররা অপারেশন করে। তখন আমি আমার মাকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তাকে বারবার ফোন করেও পাইনি। পরবর্তীতে আমার এক প্রতিবেশীকে ফোন করে বলি, তিনি যেন আমার ফ্ল্যাটে গিয়ে আমার মায়ের খোঁজ করেন। তখন তিনি আমাকে জানান, আমার ছেলের মাথায় যে গুলিটি লেগেছিল, সেই গুলিটি আমার ছেলের মাথা ভেদ করে মায়ের পেটে লেগেছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে আমার ছেলেকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসায় মায়ের গুলি লাগার বিষয়টি জানতে পারিনি, যোগ করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

্রিন্ট

আরও সংবদ