খুলনা | মঙ্গলবার | ২৮ অক্টোবর ২০২৫ | ১৩ কার্তিক ১৪৩২

খতিব মুহিবুল্লাহ নিজেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন : পুলিশ

খবর প্রতিবেদন |
০৪:৩৭ পি.এম | ২৮ অক্টোবর ২০২৫


গাজীপুরের টঙ্গী থেকে খতিব ও পেশ ইমাম মো. মুহিবুল্লাহ মিয়াজীকে অপহরণের ঘটনা মিথ্যা, তিনি নিজেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় পুলিশ।

জিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান জানান, ইমাম মুহিবুল্লাহ অপহরণের পেছনে ইসকন জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়েছিল। তবে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে তিনি নিজে শ্যামলী পরিবহনের বাসের টিকিট কেটে পঞ্চগড় গেছেন। পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চাঞ্চল্যকর এই মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ইমাম মুহিবুল্লাহর বাসের সহযাত্রী এবং বাসের সুপারভাইজারও পুলিশের হেফাজতে আছে। ইতোমধ্যে ইমাম মুহিবুল্লাহ পুলিশের কাছে প্রকৃত ঘটনা স্বীকার করেছেন।

এর আগে গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) তার অপহরণের ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা  হয়েছে। বাদী তার এজাহারে ৪-৫ জন ব্যক্তি তাকে অ্যাম্বুলেন্স তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করলেও এই সময়ের তিন ঘণ্টার মধ্যে কোনো ধরনের অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়নি।

মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান বলেন, গত বুধবার (২২ অক্টোবর) আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে খতিব মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর অবস্থান ঢাকা মহানগরীর সোবাহানবাগ এলাকা সংলগ্ন প্লাজা এ আর এর পাশে দেখা যায়। এরপর তিনি ঢাকার গাবতলী শ্যামলী কাউন্টার হতে নিজে একই তারিখ দুপুর অনুমান ২টার দিকে টিকিটে কেটে ঢাকা হতে পঞ্চগড়গামী ‘শ্যামলী পরিবহন’ বাসে ওঠেন। যাত্রাপথে বাস বগুড়া জেলার শেরপুর থানাধীন পেন্টাগন হোটেলে যাত্রা বিরতি করলে তিনি বাস থেকে নেমে হোটেলে নামাজ পড়ে দ্রুত বাসে ওঠেন। বিষয়টি পেন্টাগন হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে পাওয়া গেছে।

তিনি আরও জানান, পেন্টাগন হোটেলে মাগরিবের নামাজের জন্য সন্ধ্যা ৫টা ৪০ মিনিটে যাত্রাবিরতি করলে তিনি বাস থেকে হোটেলে নেমে নামাজ পড়ে দ্রুত বাসে ওঠেন। পরে রাত সাড়ে ১১টা হতে ১২টার মধ্যে পঞ্চগড় জেলার সর্বশেষ বাস স্টেশনে নেমে তিনি সামনের দিকে হাঁটতে থাকেন। ওই সময় তিনি সামনে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা পুলিশ লাইন্স দেখতে পান। তিনি কিছু দূর এগিয়ে অন্ধকার একটি জায়গায় রাস্তার পাশে প্রস্রাব করতে গেলে, প্রস্টেট গ্রন্থির রোগের কারণে তার পায়জামা ও পাঞ্জাবি ভিজে গেলে তিনি তার নিজ হাতে পায়জামা ও পাঞ্জাবি খুলে ফেলেন। কিন্তু কিছুটা ঠান্ডা অনুভব করায় ও শরীর ক্লান্ত থাকায় অবচেতন মনের কারণে তার পক্ষে পায়জামা ও পাঞ্জাবি পরা করা সম্ভব হয়নি। এ সময় রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া সোনালি রঙের একটি ছোট তালা যুক্ত শিকল তিনি পায়ে জড়িয়ে রাস্তার পাশে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে জেগে তিনি দেখতে পান পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে আছেন। আশপাশের উলামায়ে কেরামগণ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার অবচেতন মনে তিনি বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান জানান, বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। খতিবের বক্তব্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় অন্য কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠী জড়িত রয়েছে কিনা বা কী উদ্দেশ্যে বা কারও প্ররোচনায় এ কাজ করেছেন কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। আরও অধিক তদন্তের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ