খুলনা | বুধবার | ২৯ অক্টোবর ২০২৫ | ১৪ কার্তিক ১৪৩২

ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন, দু’জনের মৃত্যু

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৭ এ.এম | ২৯ অক্টোবর ২০২৫


নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় দু’জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল সোয়া নয়টায় ও দুপুর একটায় রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া দু’জন হলেন রিনা বেগম (৩৮) ও তাঁর ছেলে ফরহাদ (১৫)। এ ঘটনায় রিনা বেগমের আরেক ছেলে তাওহীদ (৭) চিকিৎসাধীন। তার শরীরের ১৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন রিনা বেগমের ছেলে জিহাদ (২৪), বোন সালমা বেগম (৩৪) ও তাঁর ছেলে আরাফাত (১৫)। অভিযুক্ত ফরিদ মিয়া (৪৪) পেশায় একজন পিকআপচালক ও ঘোড়াদিয়া এলাকার বাসিন্দা।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান জানান, আজ (গতকাল মঙ্গলবার) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সোয়া নয়টায় রিনা বেগম এবং দুপুর একটায় ছেলে ফরহাদের মৃত্যু হয়। রিনার শরীরের ৫৮ শতাংশ এবং ফরহাদের শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তাঁদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার রাত তিনটার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া এলাকায় স্ত্রী রিনা বেগম, সন্তানসহ ৬ জনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান ফরিদ মিয়া। শুক্রবার রাতে ফরিদ মিয়াকে একমাত্র আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন রিনার মা হোসনা বেগম। পরদিন শনিবার রাত ৮টার দিকে রায়পুরা থানার বারৈচা এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, ফরিদ মিয়া ও রিনা বেগম দম্পতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জের ধরে জিহাদ, ফরহাদ ও তাওহীদ তিন সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান রিনা। গত বুধবার রাত আড়াইটার দিকে ফরিদ মিয়া শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রী-সন্তানসহ ছয়জনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে ঘরের বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় প্রতিবেশী ও স্থানীয় লোকজন টিনের ঘরের দরজা ভেঙে দগ্ধ ছয়জনকে উদ্ধার করেন। পরে তাঁরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় দগ্ধ ব্যক্তিদের নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসক তিনজনকে ভর্তি রেখে দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন।
নরসিংদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর একমাত্র আসামি ফরিদ গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ