খুলনা | শনিবার | ০১ নভেম্বর ২০২৫ | ১৭ কার্তিক ১৪৩২

ফের বেড়েছে পেঁয়াজের বাজার, কমেনি ভোজ্য সয়াবিন তেল ও চালের দাম

আল মাহমুদ প্রিন্স |
০১:০৯ এ.এম | ০১ নভেম্বর ২০২৫


খুলনায় সবজির বাজার কিছুটা স্বাভাবিক হলেও স্থিতিশীল রয়েছে ভোজ্য সয়াবিন চাল ও পেঁয়াজের বাজার। এখনো চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যসামগ্রী ও জিনিস। আরেক দফা বাড়লো পেঁয়াজের মূল্য। পেঁয়াজের মূল্য কেজিপ্রতি বেড়েছে অন্তত পাঁচ টাকা। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী তাদের ইচ্ছামত পণ্যমূল্য বাড়িয়ে কৌশলে পকেট কাটছেন ভোক্তাদের। দাম নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিপাকে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। এছাড়া অপরবির্তিত রয়েছে ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও মাংসের বাজার। এসব পণ্য ও জিনিসের সরবরাহ থাকলেও অধিক লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও কারসাজির কারণে দাম কমছে না। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভেজাল বিরোধী অভিযান ঝিমিয়ে যাওয়ায় এসব পণ্য ও জিনিসের দাম ক্রেতাদের নাগালো আসছে না।  
শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব জিনিস ও পণ্যসামগ্রী একই দামে বিক্রি হয়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও মাংসের বাজার। 
এখনো স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে ভোজ্য সয়াবিন তেলের দাম। বোতলজাত ভোজ্য সয়াবিন ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা পাঁচ লিটার বিক্রি হচ্ছে ৯২০ টাকা দরে। অর্থাৎ, প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৪ টাকা দরে। যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খুবই কষ্টের। তবে যাদের বোতলজাত সয়াবিন আগে আনা রয়েছে তারা বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি করছে ৯৩০ থেকে ৯৪০ টাকা দরে। অথচ চার সপ্তাহ আগে লিটারপ্রতি যা বিক্রি হয়েছে ১৮৩ টাকা দরে। বোতলজাত সয়াবিনের চেয়ে লুজ সয়াবিনের দাম অনেক অনেক বেশি। লুজ সয়াবিন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। মাস দুয়েক আগেও লুজ সয়াবিন কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। সবজির দাম কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। 
নগরীর ময়লাপোতাস্থ কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে মোটা কাঁচামরিচের প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে। ফুলকপি ১২০ টাকা, উচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ টাকা, দেশি রসুন ভালোমানের ৮০ থেকে ১২০ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, কুশি ৫০ টাকা, কাঁকরল ৫০ টাকা, আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, কাঁচাকলা প্রতিহালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শীতকালিন সিম ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
তবে গত সপ্তাহে প্রতিকেজি বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২৪০ টাকা। গত সপ্তাহে এ বেগুন কেজিপ্রতি ১০০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ফুলকপি ১৪০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৫০ টাকা, মানভেদে দেশি রসুন ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকা, কুশি ৬০ টাকা, কাকরল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ২০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, কাঁচাকলা প্রতিহালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শীতকালিন সিম ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
আরেক দফা বাড়লো পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে। 
কমেনি মশুর ডালের দাম। প্রতিকেজি মশুর ডাল (মোটা) ১০০ টাকা, মশুর ডাল (সরু) ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ দেড় মাস আগে প্রতিকেজি মোটা মশুর ডাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মশুর ডাল (সরু) ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
নামছে না চালের দাম। চালের বাজার রয়েছে অপরিবর্তিত। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি স্বর্ণা চাল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, আঠাশ বালাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭৫ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬০ থেকে ৬৬ টাকা ও বাসমতি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা দেড় মাস আগে স্বর্ণা চাল ৫২ টাকা, আঠাশ বালাম ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭০ থেকে ৭২ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং বাসমতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
মুরগি, গরুর মাংসের বাজার রয়েছে আকাশ ছোঁয়া। দরিদ্র ও পরিবারের গরুর মাংস খাওয়া এখন খুবই কঠিন ব্যাপার। নিম্ন আয়ের মানুষ অধিকাংশ সময় ক্রয় করেন ফার্মের মুরগি (ব্রয়লার)। মুরগির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা, কক মুরগি ২৮০ টাকা এবং সোনালী মুরগি ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা দেড় মাস আগেও প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা, কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৬৫ টাকা এবং সোনালী মুরগি ৩২০ থেকে ৩৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কমেনি লেয়ার মুরগির ডিমের দাম। প্রতিহালি লেয়ার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা। মাসের পর মাস দেশি মুরগির ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৪ টাকা দরে। বছরের পর বছর গরুর মাংস বিক্রি হয়ে আসছে চড়া দামে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের পক্ষে কেনা কষ্টকর। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমন কি প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাজারগুলোতে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। কোথাও কোথাও আবার গরুর মাংস সাড়ে ৬শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।   
নগরীর এ্যাপ্রোচ রোডস্থ রূপসা কেসিসি মার্কেট, নতুন বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, দোলখোলা বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে একই দামে বিক্রি হয়েছে এসব জিনিস পণ্যসামগ্রী। 
নগরীর কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে আসা শাকিল আহমেদ বলেন, সবজির দাম অনেকটা কমলেও অন্যান্য জিনিসের এখনো কমেনি। 
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম আরেক দফা বেড়েছে। নগরীর রূপসা কেসিসি মার্কেটে আসেন জাহিদুল ইসালম। তিনি বলেন, সবজির রদাম কমলেও কমেনি সয়াবিন তেলসহ অন্যাস্য জিনিসের দাম। প্রত্যেকটি দোকানে পণ্যমূল্য তালিকা টানিয়ে দিলে দাম বেশি নিতে পারবে না। 

্রিন্ট

আরও সংবদ