খুলনা | মঙ্গলবার | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ | ২০ কার্তিক ১৪৩২

গুলিবর্ষণে হতাহতের ঘটনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা : নিহত শিক্ষক ইমদাদুলের দাফন সম্পন্ন, মামলা হয়নি, গ্রেফতার নেই

খুলনা এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিনত, ঘরে-বাহিরে কেউ নিরাপদ নই : এ্যাড. মনা

খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি |
০২:১৬ এ.এম | ০৪ নভেম্বর ২০২৫


খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা বলেছেন খুলনা এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিনত হয়েছে। এই শহরে এখন কেহ ঘরে-বাহিরে নিরাপদ নই। প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী হামলায় কোন না কোন স্থানে মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে। এ সকল খুনিদের আইনের আওয়াতায় আনতে প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ায় সন্ত্রাসীরা দিনের পর দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। 
তিনি বলেন, যোগিপোল ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইউপি সদস্য মামুনের উপর হামলার ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত এবং মামুনসহ বিএনপির ৩ নেতা আহত হওয়ার ঘটনায় হামলাকারী সন্ত্রাসীরা যে দলের বা যে মতের হোক তারা যত শক্তিশালী হোক অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় এই ইস্যুতে বৃহত্তর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে খুলনাকে অচল করে দেওয়া হবে।’’ 
তিনি গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় খানজাহান আলী থানা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের উদ্যোগে মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ ইমদাদুল হক নিহত এবং যোগিপোল ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক ইউপি সদস্য মোঃ মামুন শেখসহ শেখ মিজানুর রহমান ও বিল্লাল খান আহতের ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী মানববন্ধনে এ কথা বলেন। 
খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমানের সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাসের সঞ্চালনায় মানবন্ধনে বক্তৃতা করেন বিএনপি নেতা চৌধুরী শফিকুল ইসলাম, আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শেখ আব্দুস সালাম, যোগিপোল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শেখ আলমগীর হোসেন, কেসিসির ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইকবাল হোসেন মিজান, যোগিপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু, আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন খোকা, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আনোয়ার হোসেন, কেসিসি ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, থানা শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী শহিদুল ইসলাম, বিএনপি নেতা এনামুল হাসান ডায়মন্ড, হেলাল শরিফ, এমদাদ হোসেন, ফকির রবিউল ইসলাম, মিনা মুরাদ হোসেন, সেলিম আহমেদ, আজমল হোসেন, আব্দুল হাই রুমি সিকদার, আবুল কালাম আজাদ, আতাউর রহমান মোড়ল, পাশা চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম সোহেল, শরিফ ওবায়দুর রহমান চয়ন, আলামিন হাওলাদার, রাসেল, মেহেদী হাসান বাপ্পি, সিয়াম হোসেন, জিহাদুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, মাসুম বিল্লাহ, মশিউর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। 
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল যশোর-খুলনা মহাসড়কের ফুলবাড়ীগেটের গুরুত্বপুর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। 
এদিকে হামলায় নিহত মোঃ এমদাদুল হকের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার আছর বাদ সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, খানজাহান আলী থানার বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাসসহ খানজাহান আলী থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় গণ্যমান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন। 
জানাজা শেষ মরহুমের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ী যশোরের মনিরামপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। 
এর আগে গত রোববার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মোঃ মামুন শেখ (৪৫) আড়ংঘাটা থানাধীন কুয়েট রোডস্থ আইটিগেটস্থ খানাবাড়ী তার দলীয়  কার্যালয়ে তেলিগাতী বুচিতলা নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসার  শিক্ষক মোঃ ইমদাদুল হকসহ ৩/৪ জনকে নিয়ে বসে কথা বলছিল। এমন সময় দুটি মোটরসাইকেল ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী বিএনপি নেতা মামুনের অফিসে দুটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এই ঘটনায় তেলিগাতী নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ ইমদাদুল হক (৫৫) নিহত হন এবং ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য মোঃ মামুন শেখ, বিল্লাল হোসেন (৩৫) ও মিজানুর রহমান মিজান (৪৮) গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোঃ ইমদাদুল হককে মৃত বলে ঘোষণা করে। আহত বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য মোঃ মামুন শেখ ও বিল্লাল হসপিটাল এর চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছে আহতরা সকলে আশঙ্কামুক্ত। তবে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি বলে পুলিশ জানায়।

্রিন্ট

আরও সংবদ