খুলনা | মঙ্গলবার | ০৪ নভেম্বর ২০২৫ | ২০ কার্তিক ১৪৩২

শাহজালাল বিমানবন্দরের পোড়া কার্গো কমপ্লেক্সের ভল্ট ভেঙে ৭টি আগ্নেয়াস্ত্র চুরি

খবর প্রতিবেদন |
০৫:৩১ পি.এম | ০৪ নভেম্বর ২০২৫


ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুড়ে যাওয়া আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের স্ট্রং রুমের ভল্ট থেকে সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র চুরির ঘটনা ঘটেছে। ভল্টটি সাম্প্রতিক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডেও অক্ষত ছিল, তবে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, তালা ভাঙা এবং অস্ত্র খোয়া গেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মো. জামাল হোসেন গত ২৮ অক্টোবর বিমানবন্দর থানায় ভল্ট ভাঙার বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তবে অস্ত্র চুরির ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।

পুলিশ জানায়, ওই ভল্টে মোট ২১টি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল, যার মধ্যে ১৪টি পাওয়া গেছে এবং সাতটি নিখোঁজ। খোয়া যাওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম-৪ কারবাইন রাইফেল এবং ব্রাজিলের টরাস সেমি-অটোমেটিক পিস্তল।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের একজন অতিরিক্ত উপকমিশনার বলেন, ‘আমাদের কাছে বিমানের পক্ষ থেকে স্ট্রং রুম ভাঙার বিষয়ে একটি জিডি হয়েছে। তবে অস্ত্র চুরির ঘটনায় মামলা হয়নি। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখছে।’

বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে শাহজালাল বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে ভয়াবহ আগুন লাগে। প্রায় ১৭ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা আগুনে আমদানিকৃত বিপুল পরিমাণ মালপত্র পুড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। আগুনের পর স্ট্রং রুম অক্ষত থাকায় তা বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে সিলগালা করা হয়।

এরপর ২৪ অক্টোবর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, এনএসআই এবং কাস্টমসের কর্মকর্তারা স্ট্রং রুম পরিদর্শনে গেলে আগ্নেয়াস্ত্র রাখা ভল্টের তালা খোলা ও ট্রাংক ভাঙা অবস্থায় পান। তখন তারা সেখানে ২১টি অস্ত্র পান—এর মধ্যে তিনটি আংশিক পোড়া ও ১৮টি বাক্সবন্দী ছিল।

তবে গত রোববার দ্বিতীয় দফায় পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ভল্টের তালা ও ট্রাংক আবার ভাঙা এবং সাতটি অস্ত্র নিখোঁজ। পরবর্তীতে অবশিষ্ট ১৪টি অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়।

বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে কার্গো কমপ্লেক্সের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের। আমরা কেবল ফটকের নিরাপত্তা দেখি। এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি কাজ করছে, আমরাও জিডির তদন্ত করছি।’

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে তালা কাটার সরঞ্জামসহ আলামত সংগ্রহ করেছে। তবে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো এখনো সচল না হওয়ায় ফুটেজ দেখে চোর শনাক্তের সুযোগ নেই।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তাধীন থাকায় আমরা এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।’

এদিকে, মূল্যবান সোনা ও হীরা অক্ষত থাকলেও শুধু আগ্নেয়াস্ত্র চুরি হওয়াকে ‘রহস্যজনক’ বলে মনে করছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সূত্র : ইত্তেফাক 

্রিন্ট

আরও সংবদ