খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৬ নভেম্বর ২০২৫ | ২২ কার্তিক ১৪৩২

দাকোপের ঝপঝপিয়া নদী ভাঙন : আতঙ্কে ৬টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ

দাকোপ প্রতিনিধি |
০২:৩৩ এ.এম | ০৬ নভেম্বর ২০২৫


দাকোপের পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে ঝপঝপিয়া নদীর ভয়াবহ নদী ভাঙনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ৬াট গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁধটি সংস্কারে জন্য শতশত পরিবার পাউবোর আশু ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোন মুহূর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১নং পোল্ডারের চালনাসহ পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। 
সরেজমিনে ঘুরে ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খুলনার দাকোপ উপজেলার পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের মৌখালী গ্রামে গত দুইদিন ধরে গাজী বাড়ির সামনে ২শ’ মিটার পাউবো’র ভেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটলের পর এক তৃতীয় অংশ বাঁধ ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঝপঝপিয়া নদীর এ ভয়াবহ ভাঙনকে কেন্দ্র করে অত্র ইউনিয়নের মৌখালী, পানখালী, ল²ীখোলা, খাটাইল, কাটাবুনিয়া, হোগলা বুনিয়া গ্রামের প্রায় ২ হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়াও অত্র উপজেলার ভদ্রা, আন্ধার মানিক, পশুর, ঢাকী, শিবসা নদীর পানি স্বাভাবিক অপেক্ষা ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ইউনিয়নের ল²ীখোলা, পানখালী জাবেরের খেয়াঘাটের পশ্চিম পাশে, খোনা, তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঝলবুনিয়া, মোজাম নগর, আন্ধার মানিক, চালনা পৌরসভার খলিশা নামক স্থানে নতুন করে নদী ভাঙন ও ফাটল শুরু হয়েছে। এ সকল নদী ভাঙন সমূহে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে যে কোন মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের একটি অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে আইলার মত মহাবিপর্যয় নেমে আসতে পারে পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের চালনা পৌরসভাসহ পানখালী ও তিলডাঙ্গা ইউনিয়নবাসীর জীবনে।
স্থানীয় মুদি দোকান ব্যবসায়ী তৈয়বুর রহমান বলেন গত কয়েকদিন আগে মৌখালী গাজী বাড়ির সামনে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিলে তখন এটা সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবহিত করি। তিনিও তখন সংশ্লিষ্ট পাউবো’র কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তাৎক্ষণিক মুঠো ফোনের মাধ্যমে অবগত করান। তখন পাউবো এ ভেড়িবাঁধটিকে রক্ষার্থে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ফলে গত দুইদিনে ভেড়িবাঁধটির অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর এ কারণে নদী ভাঙনের পাশ^বর্তী মৌখালী গ্রামের শত শত পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
পানখালী ইউনিয়নের সদস্য মাসুদুল আলম বলেন, এ বাঁধটিতে ভাঙন আর ফাটল ধরলে আমি আমার চেয়ারম্যান মহোদয়কে অবগত করি। তিনি তখন সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষকে মৌখালী গাজী বাড়ির সামনে এ ভেড়িবাঁধ রক্ষার্থে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড তখন এ বাঁধটি সংস্কারের জন্য এগিয়ে না আসায় আজ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আর অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁধটি যে কোন মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন পাউবো’র এ পোল্ডারের চালনা পৌরসভাসহ দুইটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ জানান, মৌখালী গ্রামে গাজী বাড়ির সামনে পাউবোর এ বাঁধটি খর¯্রােতা ঝপঝপিয়ার নদীর ভয়াবহ ভাঙনে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ বাঁধটির পাশ দিয়ে দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা এলাকায় এসে বাঁধটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আশা করা হচ্ছে অতি সত্তর পাউবো এ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি রক্ষার্থে তারা কাজ শুরু করবেন।      
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) খুলনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মধুসুদন পাল বলেন, মৌখালী গ্রামের গাজী বাড়ির সামনে ঝপঝপিয়া নদীগর্ভে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভেড়িবাঁধটি সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছি এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সমীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আশপাশের কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন রোধে পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য পাউবো’র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে।  

্রিন্ট

আরও সংবদ