খুলনা | শুক্রবার | ০৭ নভেম্বর ২০২৫ | ২৩ কার্তিক ১৪৩২

অনলাইনে বিদেশি বিনিয়োগের নামে প্রতারণা, দুজন গ্রেফতার

খবর প্রতিবেদন |
০৬:০৭ পি.এম | ০৭ নভেম্বর ২০২৫


টেলিগ্রামে ‘বিদেশি বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম’ নামে গ্রুপ খুলে অল্প সময়ে বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বিনিয়োগে প্ররোচিত করা হতো। এরপর তাদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো। এমন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ চক্রের মূলহোতাসহ দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ ‎শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান।

‎সিআইডি জানায়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রেফতাররা টেলিগ্রামে ‘বিদেশি বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্ম’ নামে ভুয়া গ্রুপ খুলে অল্প সময়ে বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বিনিয়োগে প্ররোচিত করতো। গ্রুপে কিছু সদস্য বিনিয়োগে সফল হওয়ার ভান করে ইতিবাচক পোস্ট দিতেন। কিন্তু সবই ছিল চক্রের সাজানো। এভাবে প্রলুব্ধ ভুক্তভোগীরা বিনিয়োগ করলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ব্যাংক ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতেন, যা পরে আত্মসাৎ করা হতো।

‎এ ধরনের প্রতারণার ঘটনায় পল্টন থানায় দুটি পৃথক মামলা হয়। মামলার তদন্তভার সিআইডি হাতে নেওয়ার পর চক্রটিকে শনাক্ত করে অভিযানে নামে।

‎সিআইডির ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগের একটি আভিযানিক দল এলআইসি ইউনিটের প্রযুক্তিগত সহায়তায় গত ৬ নভেম্বর ভোরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা এলাকা থেকে চক্রের মূলহোতা ফারদিন আহমেদ ওরফে প্রতীককে (২৫) গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল এলাকা থেকে সহযোগী সাগর আহমেদকেও (২৪) গ্রেফতার করা হয়।

‎সিআইডি জানিয়েছে, মূলহোতা ফারদিন আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে টেলিগ্রাম ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া বিদেশি বিনিয়োগ গ্রুপ পরিচালনা করছিল। তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ৩০টিরও বেশি ব্যাংক ও এমএফএস অ্যাকাউন্ট এবং একাধিক সিমকার্ড ব্যবহার করে অর্থ লেনদেন করতেন।

‎অন্যদিকে তার সহযোগী সাগর আহমেদ “Rio” নামে ভুয়া টেলিগ্রাম আইডি থেকে “Alexa Wick” নামে একটি গ্রুপ পরিচালনা করত, যেখানে সাতজন সদস্য সক্রিয় ছিল। এই গ্রুপগুলোর মাধ্যমে তারা ‘অনলাইন বিনিয়োগের নামে’ বিপুলসংখ্যক মানুষকে প্রতারণা করেছিল।

‎তদন্তে আরও জানা গেছে, প্রতারণার মাধ্যমে সংগৃহীত টাকা নগদে রূপান্তরের জন্য ফারদিন অভিনব কৌশল অবলম্বন করতো। বিভিন্ন গাড়ির শোরুম থেকে ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে গাড়ি কিনে এক মাসের মধ্যে কম দামে বিক্রি করে কাগজে লোকসান দেখিয়ে নগদ টাকা তুলে নিতো। এই প্রক্রিয়াতেই কোটি টাকার প্রতারণার অর্থ ‘ক্যাশ আউট’ করা হতো।

‎গ্রেফতার ফারদিন আহমেদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি  জানান, তার নিয়ন্ত্রণাধীন অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে পাঁচ কোটি টাকার বেশি অর্থ লেনদেন হয়েছে।

‎চক্রের অন্যান্য সদস্য, অ্যাকাউন্টের মালিক ও অর্থের গন্তব্য শনাক্তের লক্ষে গ্রেফতার দুজনকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সিআইডি।

্রিন্ট

আরও সংবদ