খুলনা | শনিবার | ০৮ নভেম্বর ২০২৫ | ২৩ কার্তিক ১৪৩২

বিএনপি’র দুই পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ফরিদপুর, পুলিশসহ আহত ২৫

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৪ এ.এম | ০৮ নভেম্বর ২০২৫


ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপি’র দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে বোয়ালমারীর ওয়াপদার মোড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় ওয়াপদার মোড়ের পাশে হারুন শপিং কমপ্লেক্সে বিএনপি’র এক পক্ষের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১১টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া আশপাশের দোকানগুলোতেও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং উপজেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ওরফে ঝুনু এই দুই পক্ষের নেতৃত্বে বিভক্ত। উভয় নেতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দল এ আসনে মনোনয়ন স্থগিত রেখেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল তিনটার দিকে শামসুদ্দিন মিয়ার সমর্থকরা ওয়াপদার মোড় এলাকায় এবং নাসিরুলের সমর্থকরা কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজ মোড়ে সমবেত হতে শুরু করেন। হাতে তাদের বাঁশের লাঠির মাথায় ধানের শীষ বাঁধা ছিল।
বিকেল ৪টার দিকে নাসিরুলের পক্ষের মিছিল ওয়াপদার মোড়ের দিকে এগোতে থাকে। একই সময় শামসুদ্দিনের সমর্থকরা কলেজের দিকে যাচ্ছিলেন। বোয়ালমারী পৌরসভার সামনে দুই পক্ষ পরস্পরের দিকে ইট ছোড়ে। সংখ্যায় কম থাকায় শামসুদ্দিনের সমর্থকরা পিছু হটেন এবং হারুন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান নেন।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শিব্বির আহমেদ এবং বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন। 
তবে নাসিরুলের সমর্থকদের হামলায় তারা শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এরপর নাসিরুলের সমর্থকরা শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থাকা মোটরসাইকেলগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। শপিং কমপ্লেক্সের নিচতলায় থাকা শামসুদ্দিন মিয়ার কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। আশপাশের দোকানগুলোতেও হামলা করা হয়। হামলাকারীদের হাতে রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত নাসিরুলের সমর্থকদের হামলার সময় পুলিশ সদস্যরা এক কোণে অবস্থান নিয়ে আত্মরক্ষা করেন। ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও আগুন নেভাতে এসে হামলার শিকার হয়।
শামসুদ্দিন মিয়া বলেন, প্রশাসনকে জানিয়ে আমরা ওয়াপদার মোড়ে অনুষ্ঠান করছিলাম। নাসিরুলের লোকজন আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় আমাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৭ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। কার্যালয়ে থাকা বেগম খালেদা জিয়ার ছবিও ভাঙচুর করা হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে অবস্থান নেন। এর পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পুনরায় আগুন নেভান। সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকলেও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়।
বোয়ালমারী থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ