খুলনা | রবিবার | ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | ২৫ কার্তিক ১৪৩২

পতিত ও পলাতক অপশক্তিকে কোনো সুযোগ না দেওয়ার আহবান

কারো দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয় : তারেক রহমান

খবর প্রতিবেদন |
১০:৫৭ পি.এম | ০৮ নভেম্বর ২০২৫


কারো দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ, জনগণের প্রতি জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। 
শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) কনভেনশন হলে মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোট আয়োজিত হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশ অস্থিতিশীল হলে পরাজিত, পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ সুগম হতে পারে বলে সতর্ক করেন তারেক রহমান। এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘গুপ্ত রাজনীতি’ সম্পর্কে সজাগ থাকার আহŸান জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদের রোষানল থেকে বাঁচতে ফ্যাসিবাদ বিরোধীদের কেউ কেউ ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করেছিল। একই ভাবে পতিত-পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তিও বর্তমানে ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করে দেশের গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে কিনা, সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহŸান রাখছেন।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের আন্দোলনের সঙ্গী কারো কারো ভূমিকা দেশে ‘আপনার, আমার, আমাদের’ বহু মানুষের অধিকার ও সুযোগকে বিনষ্ট করার হয়ত একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে।
পতিত ও পলাতক অপশক্তিকে কোনো সুযোগ না দেওয়ার আহŸান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘গুপ্ত বাহিনীর সেই অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে, একটি ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় ও বহাল রাখা।’ সেজন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গীদের সহযোগিতা ও সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি সমুন্নত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বরাবরই ‘একটি শান্তিকামী, সহনশীল, গণমুখী’ রাজনৈতিক দল বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ভিন্ন দল, ভিন্ন মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা, এটি বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই বিএনপি’র রাজনীতি বলেও দাবি করেন তিনি।
নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে স্বল্প আয়ের মানুষদের সহায়তার জন্য ৫০ লাখ ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ এবং তরুণদের জন্য চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে বলে ঘোষণা করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভাষা শিক্ষা দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করে দেশে এবং বিদেশে কাজের ব্যবস্থার পরিকল্পনা আমরা এর মধ্যে হাতে নিয়েছি।’
বাংলাদেশে ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্যের বন্ধনই আমাদের রাষ্ট্র এবং সমাজের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সৌন্দর্য।’ এ বৈচিত্র্যময় সমাজে ঐক্যসূত্র বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে এ বাংলাদেশে আপনার যতটুকু অধিকার আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। কারো বেশি, কারো কম-তা নয়।’ এ সময় তিনি হিন্দু স¤প্রদায়ের নেতাদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহŸায়ক সোমনাথ সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে হিন্দু স¤প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় আরও বক্তৃতা করেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব ও মুখপাত্র কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, সংগঠনের যুগ্ম-আহŸায়ক সমেন সাহা, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মতুয়া স¤প্রদায়ের নেতা সুবর্ণা রানী ঠাকুর প্রমুখ।

্রিন্ট

আরও সংবদ