খুলনা | মঙ্গলবার | ১১ নভেম্বর ২০২৫ | ২৬ কার্তিক ১৪৩২

গাজীপুরে ছয়টি নয়, পাঁচটিই থাকবে

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল, ইসির সিদ্ধান্ত অবৈধ

খবর প্রতিবেদন |
০৪:৫৭ পি.এম | ১০ নভেম্বর ২০২৫


বাগেরহাট জেলায় সংসদীয় আসন কমিয়ে চারটির পরিবর্তে তিনটি করার যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নিয়েছিল তাকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত জানিয়েছেন, বাগেরহাটের আসন সংখ্যা চারটিই থাকবে। এক্ষেত্রে গাজীপুরের আসন সংখ্যা ছয়টি নয়, আগের মতো পাঁচটিই থাকবে বলে রায় দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেদিন বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন। তাকে সহযোগিতা করেন এড. বিপ্লব কুমার পোদ্দার, এড. ফয়সাল মোস্তফা, এড. রাজিয়া সুলতানা, ব্যারিস্টার কাজী সামান্তা এনাম, এড. আমিনুজ্জামান সোহাগ, এড. এনামুল ইসলাম, এড. মাহবুবুর রহমান, এড. তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ ইকরামুল কবির।
এর আগে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে দু’টি রিট দায়ের করা হয়। বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জেলা ট্রাক মালিক সমিতি এ রিট দু’টি দায়ের করে। রিটে বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও এ্যাটর্নি জেনারেলকে বিবাদী করা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা গড়ে তোলে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এবং হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেন। 
কিন্তু নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। আগের প্রস্তাবের তুলনায় শুধু সীমানা পরিবর্তন করা হয়। এর পর থেকেই সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল, অবরোধ, অবস্থান, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ইসির আসন পুনর্বিন্যাস গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে। 
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী, বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ গঠিত হয়েছে।
১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। দীর্ঘ সময় ধরে এই কাঠামো বজায় ছিল। তখনকার সীমানা ছিল: বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট-চিতলমারী), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল- মোংলা) ও বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।
স¤প্রতি প্রকাশিত ইসির চূড়ান্ত সীমানার গেজেট অনুযায়ী বর্তমান আসনের সীমানা: বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া- মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।
ভোটারের হার হিসেবে বাগেরহাটের একটি আসন কমিয়ে গাজীপুরে একটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এর প্রতিবাদে বাগেরহাটে হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। উচ্চ আদালতের রায় বাগেরহাটবাসীর পক্ষেই গেল। 

্রিন্ট

আরও সংবদ