খুলনা | বুধবার | ১৯ নভেম্বর ২০২৫ | ৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

‘আমি স্বৈরাচারী নই’— নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন জ্যোতি

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
০৬:১০ পি.এম | ১৬ নভেম্বর ২০২৫


বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। বেশ কয়েক দিন ধরেই নানা বিতর্কের কেন্দ্রে তিনি। কখনও জুনিয়রদের মারধরের অভিযোগ, কখনও সিনিয়রদের ক্যারিয়ার নষ্ট করার অপবাদ। গুঞ্জন যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা।

এমন সময়ে শিনবোন ইনজুরির রিহ্যাবে থাকা জ্যোতি বিকেএসপিতে বসে ক্রিকবাজকে দিলেন খোলামেলা সাক্ষাৎকার, জানালেন নিজের অবস্থান। ড্রেসিং রুমে ‘স্বৈরশাসন’ থেকে শুরু করে সিনিয়রদের সঙ্গে সম্পর্ক, এমনকি ভারতের বিপক্ষে সিরিজের আগে দলের পরিবেশ- সব পরিষ্কার করে বললেন। নিচে মূল অংশ তুলে ধরা হলো।

ড্রেসিং রুমে নিজের প্রভাব খাটানো নিয়ে টাইগ্রেস অধিনায়ক বলেন, আমি কোনোভাবেই স্বৈরাচার নই। সবারই জায়গা আছে ড্রেসিং রুমে- আমারও আছে। হ্যাঁ, অধিনায়ক বলে আলাদা সম্মান পাই, কিন্তু সুযোগ–সুবিধা সবারই একই। কে এসব বলছে জানি না, তবে এখন স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে কারা এর পেছনে আছে। অনেক দিন ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছি, সবাই আমাকে পছন্দ করবে, এটা আশা করা ভুল। তবে আমি জানি দলের জন্য কী করছি।

জাহানারা–রুমানাকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, এই অভিযোগটা অনেকদিন ধরেই শুনছি। আমি নাকি সিনিয়রদের সরিয়ে দিচ্ছি! প্রথম কথা, আমি কি নির্বাচক? ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলছি। কখনও ড্রেসিং রুমে কোনো ‘সিন্ডিকেট’ দেখিনি। ২০২১ সালে অধিনায়ক হওয়ার পর ২০২৩ এর অস্ট্রেলিয়া সিরিজ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী প্যানেলে থাকিইনি। অন্য খেলোয়াড়রা যেমন জানত না টিমে কারা খেলবে আমিও জানতাম না। আমাকে বাদ দিয়ে দল ঘোষণা হতো। বোর্ডে জিজ্ঞেস করলেই মিলবে সত্যিটা।

নিউজিল্যান্ডে হাসান তিলকরত্নে কোচ থাকা সময়ে এক ম্যাচে রুমানা আপু, সালমা আপু এবং হয়তো জাহানারা আপু খেলেননি। সালমা আপু আমাকে বলেছিলেন, “তুমি আমাদের বসিয়ে দিয়েছ।” আমি বলেছি, “আমি নিজেই একাদশ জানতে পেরেছি এখনই!” তখন উনি বলেছিলেন, “তাহলে তুমি শুধু টস দিতেই ক্যাপ্টেন?”, এমন কথাও শুনতে হয়েছে।”

জুনিয়রকে গালিগালাজ বা চড় মারার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। অভিযোগ করেছে কেবল একজনই। ম্যাচে উত্তেজনায় সবাইই বলে, “কেন ধরলে না?”, “ভালো কর”, “স্টাম্পে বল কর”, এটাই স্বাভাবিক। মাইক্রোফোন কাছে থাকায় আমার কণ্ঠ বেশি শোনা যায়। কিন্তু আমি কি মানসিক রোগী? আমি কোনোভাবেই কাউকে গালি দিই না।

জাহানারা আলমের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, জাহানারা আপু নাকি শুনেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় কেউ ফোন করে বলেছে “জোতি আপু মারছে”- এসব কি বিশ্বাসযোগ্য? মারলে কোচকে বলবে না? ম্যানেজমেন্টকে বলবে না? মুর্শিদা বলেছিল আমি তাকে চড় মেরেছি, আমি তো তার দলের খেলোয়াড়ই ছিলাম না ওই এনসিএলে। আমাকে কে দেখেছে মারতে? প্রমাণ কী?

শ্রীলঙ্কায় মারুফাকে নিয়ে যা হয়েছিল তা উল্টোভাবে দেখানো হয়েছে বলেও জানান জ্যোতি। তিনি বলেন, মারুফা আমার দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার। কিন্তু পাকিস্তান সিরিজ থেকে হাই ক্যাচে সমস্যা হচ্ছিল। প্র্যাকটিসে বারবার বলেছিলাম, “বাবা, ক্যাচিং ঠিক কর।” ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ এক অবস্থায় সে ক্যাচ ফেলল। তার হাতেও ব্যথা পেয়েছিল। ওর ডান হাতই বোলিং হাত। তাই বললাম, “মারুফা, তুমি বের হয়ে যাও”, আমি চাইনি হাত আরও চোট পাক।

চিৎকার করে বলতে হয়েছিল কারণ সে লং-অন এ ছিল। ও কষ্ট পেয়েছিল। ম্যাচ শেষে গিয়ে জড়িয়ে ধরেছি। কাঁদছিল কারণ ক্যাচ ফেলেছে, আমাকে কিছু বলে নি।

্রিন্ট

আরও সংবদ