খুলনা | মঙ্গলবার | ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | ৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

ক্ষমতা যাই হোক না কেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়: প্রধান উপদেষ্টা

খবর প্রতিবেদন |
১০:৩০ পি.এম | ১৭ নভেম্বর ২০২৫


জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের আদালত এমন এক স্বচ্ছতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে কথা বলেছেন, যা দেশজুড়ে এবং দেশের বাইরে পর্যন্ত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই দণ্ডাদেশ ও শাস্তি একটি মৌলিক নীতি নিশ্চিত করেছে, ক্ষমতা যাই হোক না কেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

তিনি বলেন, এই রায় ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারও মানুষের জন্য এবং যারা এখনও তাদের প্রিয়জন হারানোর বেদনা বহন করে চলেছেন, তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যদিও এখনও পর্যাপ্ত নয়-বিচারের প্রতিফলন।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বিবৃতিতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা এমন একটি মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছি যখন বছরের পর বছর দমন-পীড়নে ধ্বংস হওয়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুননির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। যে অপরাধগুলো এখানে আলোচ্য, যুবক-যুবতী ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠস্বর, তা আমাদের আইন ও সরকার ও নাগরিকদের মধ্যকার মৌলিক সম্পর্ক উভয়কেই লঙ্ঘন করেছে। এই কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মানুষের মূল মূল্যবোধ-মর্যাদা, স্থিতিস্থাপকতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকার-গভীরভাবে আঘাত করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, প্রায় ১৪০০ জীবন হারিয়ে গেছে। তারা কোনো সংখ্যা নয়; তারা ছিল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অধিকারসম্পন্ন নাগরিক। মাসব্যাপী সাক্ষ্য-প্রমাণে উঠে এসেছে কিভাবে হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালিয়ে নিরস্ত্র প্রতিবাদকারীদের ওপর প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছিল। এই রায় তাদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দেয় এবং নিশ্চিত করে যে আমাদের বিচারব্যবস্থা দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।

‘বাংলাদেশ এখন আবার বৈশ্বিক জবাবদিহিতার ধারায় ফিরে আসছে। যারা পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন-ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ নাগরিক, তারা এটি বুঝেছিলেন, এবং অনেকে তাদের জীবনও দিয়েছেন। আজকে তাদের জীবন দিয়ে আমাদের আগামীর পথ তৈরি করে গেছেন,’ যোগ করেন অধ্যাপক ইউনূস।

তিনি আরও বলেন, আগামী পথচলায় প্রয়োজন শুধু আইনি জবাবদিহিতা নয়, বরং প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠন। মানুষ কেন প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য সবকিছু ঝুঁকিতে ফেলে দেয়, তা বোঝা এবং সেই আস্থার উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। আজকের রায় সেই যাত্রার একটি পদক্ষেপ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ আস্থা রাখি যে বাংলাদেশ সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকারের সঙ্গে, ন্যায়বিচার শুধু টিকে থাকবে না; এটি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং টিকে থাকবে।’

্রিন্ট

আরও সংবদ