খুলনা | বুধবার | ২৬ নভেম্বর ২০২৫ | ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

ইসির এজেন্ডা একটাই, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন

পর্যবেক্ষকদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহবান সিইসির

খবর প্রতিবেদন |
০২:০৮ এ.এম | ২৬ নভেম্বর ২০২৫


জাতিকে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও  গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতি নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা পালনের আহŸান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তার কথায়, ‘আমরা কনসিস্টেন্টলি বলে আসছি, জাতিকে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। এটাই নির্বাচন কমিশনের একমাত্র এজেন্ডা। যত চ্যালেঞ্জই আসুক, এই কাজটি আমরা করতে চাই। এ কাজে আপনাদের সহযোগিতা খুব প্রয়োজন।’
নির্বাচন প্রক্রিয়াতে স্বচ্ছতা (ট্রান্সপারেন্সি) নিশ্চিত করতে পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ভবনে দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নেতারা ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিইসি। এসময় সিইসির সভাপতিত্বে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 
সিইসি বলেন, আমরা জাতিকে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশনের এজেন্ডা একটাই-সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যত চ্যালেঞ্জই আসুক, এই কাজটি আমরা করতে চাই। আর এই কাজে আপনাদের সহযোগিতা খুব প্রয়োজন।
পর্যবেক্ষকদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ইলেকশন অবজারভাররা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াতে ট্রান্সপারেন্সি নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা কাজ করলে ভোটারদের আস্থা বাড়বে, রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থাও বাড়বে। এমনকি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও একটি ইতিবাচক বার্তা যাবে। যদি ভোটার, রাজনৈতিক দল এবং জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রাখতে না পারে, তাহলে নির্বাচন করাটা মুশকিল হয়ে যাবে। তাই সফল নির্বাচন ডেলিভার করতে আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই।’
তিনি পর্যবেক্ষকদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে বলেন, তাদের কাজ ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা বাড়াবে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ইতিবাচক বার্তা দেবে।
সিইসি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রধানদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, তাদের নিযুক্ত কর্মীরা যেন কখনো বায়াস না হয়। পর্যবেক্ষকরা যদি রাজনৈতিকভাবে মোটিভেটেড হয়ে কাজ করে, তাহলে পুরো ইমেজ নষ্ট হয়ে যাবে। অনেক তরুণ সংগঠন বা নতুন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সংস্থাকে তাদের কর্মীদের নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
পর্যবেক্ষকদের ভূমিকার সীমা চিহ্নিত করে সিইসি স্পষ্ট করে বলেন, অবজারভারদের কাজ হলো পর্যবেক্ষণ করা, হস্তক্ষেপ করা নয়। আপনারা কাউকে প্রভাবিত করতে পারবেন না, কাউকে লাইনে দাঁড় করাতে পারবেন না। শুধু রিপোর্ট করবেন, সঠিক সময়ে পরামর্শ দেবেন।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের রিপোর্ট অবশ্যই নিরপেক্ষ, পেশাদার এবং বাস্তবতার প্রতিফলন হতে হবে, যা ভবিষ্যতে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার কাজে সহায়তা করবে। পর্যবেক্ষকরা যেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্বশীলভাবে রিপোর্টিং করবেন বলেও সতর্ক করেন সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘কাজটা আপনাদের জন্য সহজ হবে না। আপনারা অনেকেই তরুণ, অনেক সংগঠনের অভিজ্ঞতা আছে, অনেকের নেই। আপনারা যাদের নিয়োগ দেবেন, কাকে দায়িত্ব দিচ্ছেন, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাঠে তাদের মনিটর করার দায়িত্ব আপনাদেরই। তারা যেন কখনো বায়াস না হয়। অবজারভাররা যদি রাজনৈতিকভাবে মোটিভেটেড হয়ে কাজ করে, তাহলে পুরো ইমেজ নষ্ট হয়ে যাবে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘অবজারভারদের কাজ হলো পর্যবেক্ষণ করা, হস্তক্ষেপ করা নয়। আপনারা কাউকে প্রভাবিত করতে পারবেন না, কাউকে লাইনে দাঁড় করাতে পারবেন না। শুধু রিপোর্ট করবেন, সঠিক সময়ে পরামর্শ দেবেন। ফাইনাল রিপোর্টে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ দেবেন, যার ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যৎ সংস্কার করা সম্ভব হবে।’
সিইসি বলেন, ‘আমরা আপনাদের চোখ দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দেখতে চাই। আমরা সিসি ক্যামেরা দিয়ে দেখি, সাংবাদিক ভাইয়েরাও ক্যামেরা দিয়ে দেখেন। আপনাদের চোখও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের রিপোর্ট নিউট্রাল, পেশাদার এবং বাস্তবতার প্রতিফলন হওয়া জরুরি। কোথাও আমাদের গ্যাপ থাকলে আপনাদের রিপোর্ট আমাদের ভবিষ্যৎ রিফর্মে সাহায্য করবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের লোকজন যেন শুধু দু’টি জিনিস মনে রাখে, টু অবজার্ভ, নট টু ইন্টারভিন। আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন, রিপোর্ট করবেন, কিন্তু কারও ওপর শারীরিক বা ভোটাভ্যাসগত কোনো প্রভাব রাখবেন না।’
বক্তব্যের শেষাংশে সিইসি বলেন, ‘আমরা আপনাদেরকে সহযোগী হিসেবে পেতে চাই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে আপনারা যেন দায়িত্বশীলভাবে রিপোর্টিং করেন, সেটাই প্রত্যাশা।’

্রিন্ট

আরও সংবদ