খুলনা | রবিবার | ১৩ জুলাই ২০২৫ | ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

টিকিট কাউন্টার, বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে সিন্ডিকেট, প্রতারিত হচ্ছেন রোগীরা

মানহীন-ভেজাল ওষুধের প্রেসক্রিপশন হচ্ছে খুমেক হাসপাতালে, সাপ্লাই হেরাজ মার্কেট থেকে

বশির হোসেন |
১২:৩৩ এ.এম | ০৯ অক্টোবর ২০২১

 

ভেজাল ও মানহীন ওষুধের প্রেসক্রিপশন করাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৪-৫টি নাম স্বর্বস্ব কোম্পানি। এর মধ্যে লাইসেন্স বাতিল হওয়া কোম্পানিও রয়েছে। নগদ টাকাসহ নানান ধরণের প্রলোভনে পড়ে চিকিৎসকরা দেদারছে লিখচ্ছেন এসব ওষুধ। আর হেরাজ মার্কেট থেকে এসব ওষুধ সরবরাহ হচ্ছে সরাসরি রোগী এবং ফার্মেসীগুলোতে। এতে দূরদূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগীরা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়ছেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্য মতে, গত এপ্রিলে প্যারেন্ট হারবালসহ ৫৬টি ওষুধ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করা হয়। তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা এই কোম্পানির ভুয়া ক্যালসিয়ামের ওষুধ রিম ক্যাল-ডি এবং রিম-বি-অন দেদারসে লিখে যাচ্ছেন। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগদ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভুয়া এসব ওষুধ লেখা হচ্ছে। প্যারেন্ট ফার্মার বুলবুল, গুড লাইফ-এর জাকারিয়াসহ বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি নামসর্বস্ব এ কোম্পানি মানহীন ওষুধ খুলনায় বাজারজাত করার পর খুমেক হাসপাতালে এ তৎপরতা চালিয়ে আসছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের পাশাপাশি আন্ত বিভাগেও ব্যাপক তৎপরতা এসব নাম সর্বস্ব ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের। নানান প্রলোভনে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ম্যানেজ করে রোগীদের ছাড়পত্রে এসব ওষুধ লেখানো হচ্ছে। ইনডোরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এদের প্রতিনিধি নিযুক্ত থাকে, যারা রোগীদের ছাড়পত্র পর্যন্ত লিখে দিচ্ছেন, যার ছবি রয়েছে সময়ের খবরের হাতে। যা করার কথা একমাত্র ডাক্তারের। 
উচ্চ আদালতের রায়ে হারবাল ও ইউনানীতে লেখাপড়া করা হাকিমরা চিকিৎসক লিখতে পারবেন না। তবে উচ্চ আদালতের রায় উপেক্ষা করে খুমেক হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেহেদী নামে একজন অলটারনেটিভ মেডিসিনের মেডিকেল অফিসার রোগী দেখছেন। হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী কোন রোগী হারবাল চিকিৎসক দেখানোর জন্য আগ্রহ দেখালে কেবল তাকে ওখানে পাঠাতে হবে। কিন্তু টিকিট কাউন্টারে সিন্ডিকেট তৈরি করে মেডিসিন ও সার্জারির সব রোগী দেখেন অলটারনেটিভ মেডিসিনের এ মেডিকেল অফিসার (মেহেদী)। সরেজমিন অনুসন্ধানে একাধিক প্রমাণ রয়েছে সময়ের খবরের কাছে। 
এদিকে হারবালের এসব ওষুধের সব সাপ্ল¬াই হয় নগরীর হেরাজ মার্কেট থেকে। ভেজাল ও মানহীন, আমদানি নিষিদ্ধ বিদেশী ওষুধের প্যাকেটে ভুয়া ওষুধ রেখে বিক্রির অভিযোগে বিভিন্ন সময় একাধিক ফার্মেসীতে বিভিন্ন সময় অভিযান হয়েছে। সাময়িক এ অভিযানে কিছু জরিমানা হলেও এসব প্রতিষ্ঠান ফিরে আসে চিরাচরিত ব্যবসায়। দেদারছে আবারও চলছে ভেজাল ও মানহীন ওষুধের বেচা-কেনা।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ রবিউল হাসান সময়ের খবরকে বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি প্রবেশ এবং ডক্টর ভিজিটের নিয়ম ও সময় নির্ধারণ করা আছে। বৈধ কোম্পানিগুলো ঐ নির্ধারিত সময়ে তাদের কাজ করে। এর বাইরে কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা আশা করেন তিনি।

্রিন্ট

আরও সংবদ