খুলনা | মঙ্গলবার | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

নামাজে জানাজা শেষে রাজনের দাফন সম্পন্ন

খুলনার আদালত পাড়ায় জোড়া খুনে জড়িত ৫ জন শনাক্ত, হয়নি মামলা, আটক ১

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৪০ এ.এম | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫


খুলনায় প্রকাশ্যে মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটকের সামনে দিনে-দুপুরে দুইজনকে গুলি ও ধারালো চাপাতি দিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে ৫ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে এমনটি দাবি করা হলেও লোমহর্ষক ঘটনার পর একদিন অতিবাহিত হলেও হত্যায় অংশ নেয়া কেউ গ্রেফতার হয়নি। এ ঘটনায় নিহত দুইজনের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও মামলা দায়েরও করা হয়নি।
খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে ৫ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আদালত চত্বর ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থিত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের শনাক্ত করা হয়। আমরা তাদের অবস্থান শনাক্তে কাজ করছি। খুব শিগগির ভালো খবর দিতে পারব।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মামলা করার জন্য বলা হয়েছে। তবে তারা সম্ভবত নানা আশঙ্কায় মামলা করতে রাজি হচ্ছে না। এজন্য পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ওসি বলেন, এই মার্ডারের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা গেলেও তারা শহরের বাসিন্দা নন। শহর লাগোয়া রূপসা উপজেলায় তাদের স্থায়ী নিবাস। এছাড়া দুইজন শহরে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। সেখানে পরিবার থাকলেও তারা কেউ বাড়িতে অবস্থান নেন না। এরা কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না। সকলেই ইন্টারনেটের বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করে। যেসব অ্যাপসগুলোর একসেস সুযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কম। ফলে অপরাধীরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে সহজেই। তাদের গ্রেফতারে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
এদিকে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ফজলে রাব্বী রাজনের বাবা এজাজ শেখ বলেন, আমার একমাত্র ছেলে রাজন। সঙ্গ দোষে বখে গিয়েছিল। তাই বলে তাকে খুন করতে হবে। আমি মামলা করতে চাই না। কার বিরুদ্ধে মামলা করব? কারা খুন করেছে পুলিশ সব জানে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করুক। আমি মামলা করব না।
খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি সূত্র জানায়, কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল ৬ জন। তাদের কাছে ছিল ধারালো অস্ত্র ও পিস্তল। এর বাইরে ৫ থেকে ৭ জনের একটি টিম ছিল যারা গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করেছে।
আটক : খুলনায় আদালতের সামনে একই দিনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত ফজলে রাব্বি রাজন ও হাসিব হাওলদার হত্যাকান্ডে রিপন নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। 
এদিকে ময়না তদন্ত শেষে রাজন ও হাসিবের মরদেহ তাদের বাড়িতে নেওয়া হলে একনজর দেখার জন্য বাড়িতে ভীড় জমায় গ্রামবাসী ও স্বজনরা। 
রূপসা উপজেলার বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা মৎস্য ব্যবসায়ী এজাজ শেখের ছেলে ফজলে রাব্বি রাজনের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বাদ আছর বাগমারা দারুস ছালাম জমে মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। নামাজে জানাজা পরিচালনা করেন বাগমারা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল হুসেইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র আহŸায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোল­া সাইফুর রহমান, প্রিয়াম সী ফুডস এক্সপোর্ট লিমিটেড চেয়ারম্যান আকতার হোসেন খান, রূপসা-বাগেরহাট বাস-মিনিবাস চেয়ার কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন শেখ, সমাজসেবক শাহাজান শেখ, নৈহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইলিয়াস হোসেন, সামছুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী, নৈহাটী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব দিদারুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক মোঃ গোলাম হোসেন, দারুস ছালাম জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মিজানুর রহমান, মোঃ হুমায়ুন শেখ, বাগমারা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি হাফেজ মাওলানা আরাফাত হোসাইন লিমন, উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সদস্য সচিব মোঃ ইউনুচ গাজী, ডাইরেক্টর নজরুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার শেখ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আমির হোসেন, খুলনা সিটি করপোরেশনে কর্মরত মোঃ জাহিদ মেহেদী, ইশারাত হোসেন ইসা, শরিফুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম, সাবেক ছাত্রদল নেতা মাঈনুল হাসান, এস এম মিজানুর রহমান ও সাজ্জাদ হোসেন লিপন, শ্রমিক দল নেতা মোঃ লাভলু শেখ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ মহব্বত আলী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ ওমর আলী শেখ, মোঃ হানিফ শেখ, সার্ভেয়ার মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ বাবুল শেখ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন, বাপ্পি কোরেশি, নিহত রাজনের পিতা মোঃ এজাজ হোসেন, মোঃ হুমায়ুন শেখ, ইয়াহিয়া হোসেন, মাহামুদ শেখ, মোঃ মহাসিন শেখ, মুকিজ উদ্দিন শেখ, মোঃ মেহেদী হাসান, মইন উদ্দিন মোহন, হাফেজ মাসুদ মীর, তুষার শেখ, বাবুল হোসেন টিক্কা, আলী আকবর রাজু, জি এম রাসেল, মোঃ হারুন শেখ প্রমুখ।

্রিন্ট

আরও সংবদ