খুলনা | সোমবার | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

জাতীয় নির্বাচনে ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়াল ইসি

খবর প্রতিবেদন |
০৪:০০ পি.এম | ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

 

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হওয়ায় সময় ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে ভোটের সময় এক ঘণ্টা বৃদ্ধি করা এবং পঙ্গু, বয়স্ক ও সন্তানসম্ভবা মাসহ বিশেষ সহায়তা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রোববার (০৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভার পর নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান। সভায় সিইসি ছাড়াও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সময় ব্যবস্থাপনার জন্য নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো ব্যাখ্যা করে কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। ভোট এখন সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হবে এবং চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত (সকালে আধা ঘণ্টা এবং বিকেলে আধা ঘণ্টা বৃদ্ধি)। যে সব ভোট কক্ষে স্থান সংকুলান হবে, সেগুলোতে একাধিক মার্কিং প্লেস (সিক্রেট বুথ) স্থাপন করা হবে। যেখানে বুথ বাড়ানোর জায়গা নেই, সেখানে প্রয়োজনে একটি আলাদা বুথ তৈরি করতে হবে।

প্রবাসী ও ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ব্যালট বিষয়ে তিনি জানান, প্রবাসী এবং দেশের অভ্যন্তরে পোস্টাল ভোটিংয়ের বিষয়েও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালট ছাপানোর কাজ শুরু হবে এবং পরশুদিন থেকে বিদেশে প্রেরণ শুরু হবে। সেই সঙ্গে পোস্টাল নিবন্ধনের সময়সীমা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া তফসিল ঘোষণার দিন থেকে শুরু করে ১৫ দিনব্যাপী ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিংয়ের জন্য নিবন্ধন কাজ শুরু হবে।

প্রচার সামগ্রী অপসারণ ও নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সানাউল্লাহ বলেন, আচরণবিধি নিশ্চিত করতে প্রচার সামগ্রী অপসারণ এবং অন্যান্য বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়ে সব ধরনের প্রচার সামগ্রী সরানোর নির্দেশ দেওয়া হবে। না সরালে আচরণবিধির আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের অনুদান, ত্রাণ ইত্যাদি বিতরণে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হবে। তবে সোশ্যাল সেফটি নেটওয়ার্ক (বয়স্ক ভাতা ইত্যাদি) এর ওপর কোনো বাধা নিষেধ থাকবে না।

প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি জানান, নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা কার্যক্রমে ইসির প্রস্তুতি সুনির্দিষ্ট। নির্বাচনে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের আগের রাতে কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর কোনো ধরনের স্থানীয় সহায়তা না নেওয়ার জন্য কমিশন দৃঢ়ভাবে নিরুৎসাহিত করছে। এজন্য তাদের যথাযথ বাজেট সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে একটি পরিপত্র এই সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হবে। এতে স্ট্যাটিক ডেপ্লয়মেন্ট থেকে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পর্যন্ত সব ধরনের ফোর্স কাজ করবে। এছাড়া তফসিল ঘোষণার দিন সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের সঙ্গে জুম মিটিং করা হবে এবং পরবর্তীতে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরে ফিজিক্যাল মিটিং হবে।

বিচারিক ক্ষমতাসহ মনিটরিং সেল ও ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন প্রসঙ্গে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনী অনিয়ম ও ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় ইসি বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে। যেমন- নির্বাচন কমিশনে একটি সেন্ট্রাল মনিটরিং সেল স্থাপিত হবে, যা মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশন হ্যান্ডেল করবে। সেই সঙ্গে ৩০০ আসনে ৩০০টি কমিটি কাজ করবে ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি। এই কমিটিকে এডজুটিকেশনের (বিচারিক) সক্ষমতাও দেওয়া হবে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে তফসিল ঘোষণার পরের দিন থেকে প্রত্যেক উপজেলা বা থানায় দুজন করে ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন। নির্বাচনের শেষ পাঁচ দিনে (আগের তিন দিন, নির্বাচনের দিন ও পরের দিন) এই সংখ্যা বাড়বে।

তিনি আরও জানান, ভোটগ্রহণের দিন সাধারণ ছুটি থাকবে। দুর্গম এলাকায় নির্বাচনী মালামাল, ব্যালট পেপার এবং ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের চলাচলের জন্য হেলিকপ্টার সহায়তা ব্যবহৃত হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাংক এবং পোস্ট অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ব্যালট পেপার আগের রাতে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নে ইসি বলেন, আমরা কনফিডেন্ট। আমরা আর ওইসব ঘটনার অবতারণা দেখব না। আমরা আমাদের কনফিডেন্সের জায়গাটাতে ফেরত যেতে চাই। যথাযথ সুপারভিশন থাকবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ