খুলনা | বুধবার | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

ঐক্যবদ্ধ না হলে ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করছে, নেতাকর্মীদের তারেক

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৬ এ.এম | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫


নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি’র মধ্যে চরম অন্তঃকোন্দল দেখা দিয়েছে। সে দিকে ইঙ্গিত করে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সামনে কঠিন যুদ্ধ উল্লেখ করে বিভেদ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ না হলে ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
মনোনয় নিয়ে বিরোধের দিকে ইঙ্গিত করে তারেক রহমান বলেন ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নয়, মুখ্য ধানের শীষ, দল এবং দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা। ঐক্যবদ্ধ না হলে সামনে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কম-বেশি যেটা ভালো মনে হয়েছে, সেই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তোমার এলাকায় প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে; হয়তো তুমি যাকে পছন্দ করতে, সে মনোনয়ন পায়নি-যে পেয়েছে তার সঙ্গে তোমার যোগাযোগ কম। কিন্তু আরে ভাই, তুমি তো প্রার্থীর জন্য নয়, তুমি ধানের শীষের জন্য, দলের জন্য! এখানে প্রার্থী মুখ্য নয়, মুখ্য তোমার দল, দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা, মুখ্য ধানের শীষ।
তারেক রহমান বলেন, সামনের যুদ্ধটা অনেক কঠিন। ঐক্যবদ্ধ না হতে পারলে সামনে ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করছে। আন্দোলনের সময় যেমন জনগণকে বুঝিয়েছিলে, তেমনি দেশ গড়ার পরিকল্পনা সম্পর্কেও তাদের বোঝাতে হবে, সম্পৃক্ত করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো কিছুই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
এ সময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে দলটির কিছু বক্তব্যের সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, এখন দেশে এক ধরনের প্রচারণা চলছে-একজন বিশেষ কেউ ভালো, আর বাকি সবাই খারাপ এটা গণতন্ত্রণের জন্য ডেঞ্জেরাস ব্যাপার।
তারেক রহমান বলেন, গত ১৬ বছর একটা দল প্রচার করতো শুধু তারাই ভালো আর বাকি সবাই খারাপ। ৫ তারিখের পর সেটির বোধহয় কোনো পরিবর্তন হয়নি।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এখনো আবার এক ধরনের প্রচারণা চলছে যে, একজন ভালো আর বাকি সবাই খারাপ। এসব প্রচারণা পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি।
বর্তমান দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস। সেই অবস্থা পরিবর্তন করতে হলে জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া আমরা পারবো না।
তারেক রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ বিএনপিকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিলে জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচি আবার হাতে নেয়া হবে। বন্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ফসলের ক্ষেতে সেচ নিশ্চিতের ব্যবস্থা করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, এক মাঠে তিন ফসল ফলানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। বিএনপি’র আগামী দিনের পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে বিষয়টি জায়গা পেয়েছে।  
এ সময় প্রবাসীদের জন্য বিএনপি’র নেয়া নানা উদ্যোগের কথাও জানান তিনি। বলেন, রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রবাসে যাওয়া ও উপার্জনের পথ তৈরি করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আমরা প্রবাসীদের স্বার্থরক্ষা এবং ভালো মানের কর্মী পাঠানোর বিষয়ে কাজ করবো।
তরুণদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, প্রযুক্তির জ্ঞান থাকলে তরুণরা অনেকবেশি আয় করতে পারবে। এছাড়া ভাষাগত জ্ঞান থাকলে তাদের কর্মসংস্থান ও আয়-উন্নতির সুযোগ আরও বাড়বে। বিএনপি এসব বিষয়ে কাজ করতে চায়। মানুষের জীবনমান উন্নত করতে নানা পরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন হায়দার, ডাঃ মাহদী আমিন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।

্রিন্ট

আরও সংবদ