খুলনা | শনিবার | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

অগ্নিমুখি ভোজ্য সয়াবিন ও চালের বাজার সয়াবিন তেল প্রতিলিটারে ৯, পেঁয়াজে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা

কমছে না পেঁয়াজের দাম, স্বস্তি ফেরেনি সবজিতেও

আল মাহমুদ প্রিন্স |
০১:০৬ এ.এম | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫


শীতের সবজি বাজারে এসেছে বেশ আগেই। নতুন পেঁয়াজও আসতে শুরু করেছে। তবে দামে এর প্রভাব পড়েনি বললেই চলে। এখনও পুরাতন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে। সবজির বাজারেও স্বস্তি ফেরেনি।
নিত্যপণ্যের দাম কমাতে বর্তমান সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিলেও স্বস্তি ফেরেনি বাজারে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার চাল, আলু, পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। অগ্নিমুখি হয়ে উঠছে ভোজ্য সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ ও চালের বাজার। সবজির বাজার কিছুটা কমতির দিকে থাকলেও চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে এ তিনটির পণ্য। বাজারে সবজির পর্যাপ্ত সমারহ থাকলেও আশানুরুপ দাম কমেনি সব ধরনের সবজির। পাশাপাশি দাম কমছে না ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও মাংসের। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা ও ভোজ্য সয়াবিন লিটারপ্রতি ৯ টাকা বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব জিনিস ও পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে নি¤œ ও মধ্য আয়ের মানুষ। 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে এসব জিনিস ও পণ্য বিক্রি হয়েছে প্রায় একই দামে। ভোজ্য সয়াবিন তেলের মূল্য বাড়লো আরেক দফা। গত এক সপ্তাহ আগে বোতলজাত ভোজ্য সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ১৮৪ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে প্রতিলিটার বিক্রি হচ্ছে ১৯৩ টাকা দরে। অর্থাৎ, বোতলজাত ভোজ্য সয়াবিন ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা পাঁচ লিটার বিক্রি হচ্ছে ৯৬৫ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৯২০ টাকা দরে। 
আশানুরূপ মূল্য কমেনি সবধরণের সবজিতে। নগরীর ময়লাপোতাস্থ কেসিসি সন্ধ্যা বাজার, নগরীর রূপসা ট্রাফিক মোড়স্থ রূপসা কেসিসি সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, উচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, মানভেদে দেশি রসুন ১২০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, কুশি ৪০ টাকা, কাঁকরল ৪০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচাকলা প্রতিহালি ৪০ টাকা, শীতকালিন সিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
আরেক দফা বাড়লো পেঁয়াজের দাম। নতুন পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, দেশি ভালোমানের পেঁয়াজ ১৫০ টাকা। অথচ গত সপ্তাহে দেশি ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা দরে।   
স্থিতিশীল রয়েছে মশুর ডালের দাম। প্রতিকেজি মশুর ডাল (মোটা) ১০০ টাকা, মশুর ডাল (সরু) ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। একমাস আগে প্রতিকেজি মোটা মশুর ডাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মশুর ডাল (সরু) ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
বৃদ্ধি পেয়েছে চালের দাম। খুচরা বাজারে ৫৫ টাকার নিচে মিলছে না চাল। অন্তত তিন মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে চার থেকে পাঁচ টাকা। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি স্বর্ণা চাল ৫৫ থেকে ৫৬টাকা, আঠাশ বালাম ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭৫ টাকা, মিনিকেট নি¤œমানের ৬০ থেকে ৬৬ টাকা ও বাসমতি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ দেড়মাস আগে স্বর্ণা চাল ৫২ টাকা, আঠাশ বালাম ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭০ থেকে ৭২ টাকা, মিনিকেট নি¤œমানের ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং বাসমতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
বাজারে বয়লার ও কক মুরগির দাম বাড়তে শুরু করছে। শীত আসছে অনুষ্ঠান বাড়বে, থার্টিফার্স্ট নাইট আসবে... এসব কারণে দাম বাড়তে পারে আগেই বলেছিল বিক্রেতারা। মূলত সেভাবেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। 
কমছে না মুরগির দাম। কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা ও কক মুরগি ২৭০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। দেখা গেছে, প্রতিকেজিতে বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে সাত টাকা, কক মুরগির দাম বেড়েছে ২-১০ টাকা। তবে লেয়ার মুরগির দাম কমেছে ৫-১৫ টাকা। এছাড়া অন্যান্য মাংস ও ডিমের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
বছরের পর বছর অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। কোনো ভাবে ভাঙতে পারছে না ব্যবসায়ীদের এ সিন্ডিকেট। নি¤œ আয়ের মানুষের পক্ষে যা কেনা খুব কষ্টের। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমনকি গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। কোথাও কোথাও আবার সাড়ে ৬শ’ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে। 
কমছে না ডিমের দাম। প্রতিহালি লেয়ার মুরগির ডিম খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। মাসের পর মাস দেশি মুরগির ডিম প্রতিহালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৪ টাকা দরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর ২৬টি খুচরা বাজারে প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে এসব জিনিস ও পণ্যসামগ্রী। 
নগরীর ময়লাপোতাস্থ কেসিসি সন্ধ্যা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত টাটকা সবজি রয়েছে। অথচ দামে কমতি নেই। 

্রিন্ট

আরও সংবদ