খুলনা | রবিবার | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

গণভোটের প্রশ্ন, সময়সূচি, ভোটগ্রহণ পদ্ধতি ভোটদানের প্রক্রিয়া নিয়ে ইসির পরিপত্র

ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ না পেলে বাজেয়াপ্ত হবে প্রার্থীর জামানত

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৯ এ.এম | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের সময়সূচি, ভোটগ্রহণ পদ্ধতি ও ভোটদানের প্রক্রিয়া নিয়ে পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০২৬-এর ফেব্র“য়ারিতে অনুষ্ঠেয় গণভোটের প্রশ্ন, ভোটদানের সময়, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, ভোটগ্রহণ পদ্ধতি নির্ধারণ, ফলাফল প্রকাশসহ বিভিন্ন বিষয়ে ইসি এই পরিপত্র জারি করেছে। বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট পেতে হবে। অন্যথায় জামানত বাবদ জমা দেওয়া ৫০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।
ইসি সচিবালয়ের উপ-সচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখা) মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত কতিপয় প্রস্তাবের বিষয়ে জনগণের সম্মতি রয়েছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য সরকার গণভোট অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এলক্ষ্যে সরকার কর্তৃক ইতোমধ্যে গণভোট অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়েছে। গণভোট অনুষ্ঠান সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুচারুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এর সহায়ক হিসেবে নির্দেশনা স্বরূপ নির্বাচন কমিশন নিম্নোক্ত পরিপত্র জারি করছে।’ 
ইসি পরিপত্রে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল ও গ্রহণ, জামানত, প্রস্তাবকারী-সমর্থনকারীর যোগ্যতা, রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়ন, মনোনয়নপত্র দাখিলকারীদের তথ্য প্রদান, মনোনয়নপত্র বাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহার, বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
ইসির জারি করা পরিপত্রে দেখা গেছে, কোনো প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট পেতে হবে। অন্যথায় জামানত বাবদ জমা দেওয়া ৫০ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জামানত জমা দিতে হবে। এ অর্থ নগদ, ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে ইসির অনুকূলে জমা দেওয়া যাবে। একই নির্বাচনী এলাকায় একাধিক মনোনয়নপত্র দিলে একটি জামানতই যথেষ্ট হবে। অন্য মনোনয়নপত্রের সঙ্গে চালানের সত্যায়িত অনুলিপি দিতে হবে। জামানতের বাইরে কোনো অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ বা প্রদান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জামানতের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক, যে কোনো ব্যাংক বা সরকারি ট্রেজারি বা সাব ট্রেজারিতে ১০৯০৩০২১০১৪৪৩-৮১১৩৫০১ কোড নম্বরে জমা দিতে হবে। নগদে প্রাপ্ত জামানতের অর্থ রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসার সরকারি খাতে জমা দেবেন।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল : পরিপত্রে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে সরাসরি দাখিলের জন্য মনোনয়ন ফরম (ফরম-১) সংগ্রহ করবেন। ইতিমধ্যে এসব ফরম ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ফরম বিতরণের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করতে হবে।
সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যোগ্য ব্যক্তিরা যথাযথভাবে পূরণ করা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যে কোনো দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল বা জমা দেওয়া যাবে।
গণভোট এর বিষয়/প্রশ্ন: ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি ভোটারগণ সম্মতি জ্ঞাপন করেন কি না (হ্যাঁ/না) সেই বিষয়ে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। 
(ক) নির্বাচনকালীন তত্ত¡াবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।
(খ) আগামী জাতীয় সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।
(গ) সংসদে নারী প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল হতে ডেপুটি স্পীকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, মৌলিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাসহ তফসিলে বর্ণিত যে ৩০টি বিষয়ে জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্য হয়েছে-সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক দলগুলো বাধ্য থাকবে।’ 
(ঘ) জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অপরাপর সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্র“তি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।’
গণভোট অনুষ্ঠানের সময়সূচি ও গণবিজ্ঞপ্তি: ‘গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণের সময়সূচি উল্লেখ করে ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিন অর্থাৎ আগামী ১২ ফেব্র“য়ারি ২০২৬ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একই সাথে বিরতিহীন ভাবে অনুষ্ঠিত হবে।’ 
রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ: ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন কর্তৃক যে সকল রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ ও অধিক্ষেত্র নির্ধারণ করা হবে সে সকল রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারগণ গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিক্ষেত্রে নিযুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন। একই ভাবে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে যে সকল প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারগণ নিযুক্ত হবেন সেসকল প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারগণ গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রে নিযুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাগণ একইসাথে একই সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।’
ভোটকেন্দ্র, ভোটার তালিকা ও ভোটার: ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ভোটকেন্দ্র, গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতকৃত ভোটার তালিকা হবে গণভোটের ভোটার তালিকা এবং উক্ত তালিকাতে উল্লিখিত ভোটারগণ গণভোট প্রদানের অধিকারী হবেন। অর্থাৎ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সহকারী রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক প্রিজাইডিং অফিসারের নিকট সরবরাহকৃত প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের জন্য ভোটদানের অধিকারী ভোটারগণের তথ্য সম্বলিত ভোটার তালিকা গণভোটের ভোটার তালিকা হিসেবে ব্যবহৃত হবে।’
ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স: ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ভিন্ন রংয়ের ব্যালটে অনুষ্ঠিত হবে। গণভোটের ব্যালট (ফরম-১) গোলাপি রঙের হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত, নির্ধারিত এবং সরবরাহকৃত স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সই গণভোটের ব্যালট বাক্স হিসাবে ব্যবহৃত হবে। ভোটারগণ ভোট প্রদান শেষে জাতীয় সংসদের ব্যালট ও গণভোটের ব্যালট একই বাক্সে ফেলবেন।’
পোস্টাল ভোট: ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ২৭ দফা (১) এর উপ-দফা (ক) বা (খ) বা (গ) বা (ঘ) তে উল্লিখিত বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি ভোটার ও দেশে অবস্থানরত নির্দিষ্ট ভোটারগণও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ এর সাথে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট এ ভোটদান করবেন। গণভোট এর জন্য পোস্টাল ব্যালট (ফরম-২) ব্যবহৃত হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে যোগ্য ব্যক্তিগণ যে পদ্ধতি অবলম্বনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন গণভোটের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসত হবে।’ 
ভোটদান পদ্ধতি: ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে একই সাথে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপারের সাথে গণভোটের একটি ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হবে এবং গণভোটের ব্যালট পেপারে হ্যাঁ বা না তে সিল দিয়ে ব্যালট পেপার ভাঁজ করে নির্ধারিত ব্যালট বাক্সে ফেলবেন। পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে, ভোটার গণভোটের পোস্টাল ব্যালট পেপারে (ফরম-২) হ্যাঁ বা না এর পাশে ফাঁকা ঘরে টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে প্রদান করে তাঁর ভোট/মত প্রকাশ করবেন।’
ভোটার কর্তৃক ভোটদানের প্রক্রিয়া: ‘ভোটার ব্যালট পেপার পাওয়ার সাথে সাথে ব্যালট পেপার চিহ্নিত করার জন্য নির্ধারিত গোপন কক্ষে যাবেন। যে প্রশ্নটিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সে প্রশ্নে হ্যাঁ-সূচক বা না-সূচক ভোটদান করতে চাইলে একজন ভোটার ব্যালট পেপারে মুদ্রিত হ্যাঁ-সূচক ঘরে বা না-সূচক ঘরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সরবরাহকৃত সিলমোহর দ্বারা নিজ ভোট প্রদান করবেন। ভোট প্রদানের পর ভোটার ব্যালট পেপারটি ভাঁজ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালটের সাথে নির্ধারিত স্থানে রক্ষিত ব্যালট বাক্সে তা প্রবেশ করাবেন।’ 
ভোটগ্রহণ সমাপ্তির পর: ‘ভোটগ্রহণ সমাপ্তির অব্যবহিত পর প্রিজাইডিং অফিসার ভোটকেন্দ্রে/পোস্টাল ভোটের গণনা কেন্দ্রে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে নিয়োজিত এজেন্টদের উপস্থিতিতে (যদি থাকে) প্রত্যেকটি ব্যালট বাক্স খুলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ও গণভোটের ব্যালটসমূহ আলাদা করবেন। অতঃপর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালটসমূহ প্রার্থী ভিত্তিক এবং গণভোটে ভোটদানকৃত হ্যাঁ-সূচক ও না-সূচক ব্যালট পেপারসমূহ পৃথক করে গণনা করবেন।’ 
রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়ন : রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দলের নিজস্ব প্যাডে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদাধিকারীর স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে।
একটি নির্বাচনী এলাকায় যদি কোনো রাজনৈতিক দল একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়, তবে আগামী ২০ জানুয়ারি বিকেল ৫টার মধ্যে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম লিখিতভাবে রিটার্নিং অফিসারকে জানাতে হবে।
চূড়ান্তভাবে মনোনীত প্রার্থী দলীয় প্রতীক পাবেন, যদি না তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। প্রতীক বরাদ্দ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পরে আলাদা পরিপত্রে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ইসি।
মনোনয়নপত্র জমাদান : ইসির নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন। ওই দিন বা তার আগের যেকোনো দিনে প্রার্থী, প্রস্তাবকারী বা সমর্থনকারী মনোনয়নপত্র দাখিল করলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুচ্ছেদ ১২ এর (৩) অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসার তা গ্রহণ করবেন।
অফিসারগণ মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় নির্ধারিত স্থানে ক্রমিক নম্বর দেবেন। রিটার্নিং অফিসার মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় ‘রিঅ-’ এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার ‘সরিঅ-’ লিখে নম্বর দেবেন। এক প্রার্থী একাধিক মনোনয়নপত্র জমা দিলে প্রথমটিতে পূর্ণ নম্বর এবং অন্যগুলোর ক্ষেত্রে বন্ধনীতে (ক), (খ) বা (১), (২) ব্যবহার করা যাবে।
প্রাপ্তি রসিদ ও বাছাইয়ের নোটিশ : মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় প্রতিটি মনোনয়নপত্রের তথ্য রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে মনোনয়নপত্রের তৃতীয় অংশে দাখিলকারীর নাম, জমাদানের তারিখ ও সময় উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া, নির্বাচনী এলাকার নাম ও নম্বর, প্রার্থীর নাম, মনোনয়নপত্র জমার তারিখ ও সময় এবং বাছাইয়ের নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থান উল্লেখ করে মনোনয়নপত্রের পঞ্চম অংশে যুক্ত থাকা প্রাপ্তিস্বীকার রসিদ তাৎক্ষণিকভাবে প্রার্থী বা প্রস্তাবকারী বা সমর্থনকারীকে দিতে হবে।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার থেকে মনোনয়নপত্র প্রেরণ : ইসির জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের ক্ষমতা রিটার্নিং অফিসারের ওপর ন্যস্ত। তাই সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে দাখিলকৃত সব মনোনয়নপত্র ২৯ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার পরপরই নিরাপত্তার সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাতে হবে।
প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর যোগ্যতা : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার যে কোনো ভোটার সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে প্রস্তাব বা সমর্থন করতে পারবেন। তবে প্রস্তাবকারী বা সমর্থনকারী হিসেবে কেউ একাধিক মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করতে পারবেন না।
প্রতিটি মনোনয়নপত্রে প্রার্থীর সম্মতি, অযোগ্যতা না থাকার ঘোষণা এবং তিনটির বেশি নির্বাচনী এলাকায় মনোনয়ন জমা না দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ