খুলনা | রবিবার | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

ডিপ কোমায় হাদি, স্থিতিশীল হলে দেশের বাইরে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত

খবর প্রতিবেদন |
০২:০১ পি.এম | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি আতাতায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শারীরিক পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে কিছুটা উন্নতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাকে বিদেশ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন।

আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, ওসমান হাদিকে তার পরিবার ও ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে। অবস্থা বিদেশে নেওয়ার মতো উন্নতি হলেই নেওয়া হবে।

তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির পাশে সার্বক্ষণিক রয়েছেন। তিনি বলেন, ওসমান বিন হাদির অবস্থা অপরিবির্তত রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া হতে পারে।

তিনি জানান, ওসমান হাদি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। চিকিৎসক ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন। সেই সময় আগামীকাল সোমবার রাতে শেষ হবে।

আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, ওসমান হাদি এখনো ডিপ কোমায় আগের অবস্থায় আছেন। তার শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। তবে ইন্টারনাল রেসপন্স আছে।

এর আগে, ইনকিলাব মঞ্চ থেকেও জানানো হয়, হাদির অবস্থা এখনো অত্যন্ত সংকটাপন্ন এবং তাকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি চিকিৎসা শেষে নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, গুলি কানের ডান পাশ দিয়ে প্রবেশ করে মাথার বাঁ পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

বর্তমানে একই হাসপাতালে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ কারণে হাদি ও খালেদা জিয়ার খোঁজখবর নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় করছেন।

সিলেট থেকে আসা এক ব্যক্তি জানান, হাদির পাশাপাশি খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্যও তারা দোয়া করতে এসেছেন। তার মতে, শরিফ ওসমান হাদি প্রতিবাদী কণ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং হামলার ঘটনাটি নৃশংস।

জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা শরিফ ওসমান হাদি গত বছরের আগস্টে ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করেন। তিনি পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ না দিয়ে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিনই তার ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার পর হাদির সমর্থকেরা এর দায় পতিত আওয়ামী লীগের ওপর চাপিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ঘটনাটিকে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি পৃথক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।

এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান নামের একজনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাকে ধরিয়ে দিতে তথ্য দিলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল শনাক্ত করে এর মালিককে আটক করার তথ্যও জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

্রিন্ট

আরও সংবদ