খুলনা | সোমবার | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

মেসিকে ভারতে আনা শতদ্রু ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
০৩:৫৩ পি.এম | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫


আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসির সঙ্গে শনিবারই (১৩ ডিসেম্বর) কলকাতা ছেড়ে হায়দরাবাদ চলে যাওয়ার কথা ছিল তাকে ভারতে আনার মূল কারিগর শতদ্রু দত্তের। তবে তার আগেই সিআইএসএফ ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন শতদ্রু। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) তাকে পেশ করা হয় বিধাননগর মহকুমা আদালতে। সেখানে তাকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতে কোর্টে পেশ করার সময় শতদ্রুর বিরুদ্ধে এদিন কোর্ট চত্বরেই বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।

আদালতে সরকারি আইনজীবী শতদ্রুর জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন।  কোনোভাবেই যাতে অভিযুক্তকে জামিন না দেওয়া হয় সেই দাবি করেন তিনি। এই ঘটনায় আর কে কে যুক্ত, সেই তথ্য-প্রমাণ চান এই সরকারি আইনজীবী।

অপরদিকে শতদ্রুর আইনজীবী জানান, কোনোভাবেই ১৪ দিনের হেফাজতের প্রয়োজন নেই। সেই দিন যেন কমানো হয়। কারণ শতদ্রু শুধু আয়োজক। তিনি শুধু আয়োজন করেছিলেন অনুষ্ঠানের। দীর্ঘ শুনানির পর আদালত অভিযুক্তকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

শনিবার সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে ব্যাপক ভাঙচুর ও বিক্ষোভের পর রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার ও এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম জানিয়েছিলেন, এই ঘটনায় কাউকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না। এরপরেই বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় শতদ্রুকে। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে কলকাতা পুলিশ। বিধান নগর দক্ষিণ থানায় মামলার দায়ের হয় অশান্তি সৃষ্টি, ভাঙচুর, হিংসা ছড়ানো, নাশকতামূলক কার্যকলাপ এবং জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগে।

ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বা বিএনএস-এর ১৯২, ৩২৪, ৩২৬, ১৩২, ১২১, ৪৫, ৪৬ ধারায় মামলা করা হয় শতদ্রুর বিরুদ্ধে। এছাড়াও এমপিও বা মোটর ভেইকলস আইন ও পিডিপিপি আইনেও (প্রিভেনশন অব ড্যামেড টু পাবলিক প্রপার্টি অ্যাক্ট) মামলা হয়।

আজ আদালত চত্বরে অভিযুক্ত শতদ্রুকে যখন প্রিজন ভ্যান থেকে নামানো হয়, সেসময় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।  বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা তার উদ্দেশ্যে চোর চোর শ্লোগান দিতে থাকে। তাদের হাতে ছিল গেরুয়া পতাকা, সঙ্গে চপ্পল। তবে সেই চপ্পল ছুড়ে মারার আগেই পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

তবে কলকাতা পুলিশের তরফে ডিজিপি রাজীব কুমার জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার তদন্তে একটি সরকার-নিযুক্ত কমিটি গঠন করা হবে। অনুষ্ঠান পরিচালনায় গাফিলতি ছিল কি না, ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সব দিকই খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশের দাবি, আয়োজকের কাছ থেকে লিখিত প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়েছে যাতে দর্শকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা যায়।

উল্লেখ্য, শনিবার কলকাতা শহরে পা রাখেন লিওনেল মেসি। তার কর্মসূচি ছিল ঠাসা। যুবভারতীতে শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে দর্শকরা জমায়েত হন। এমনকি দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকেও মেসিপ্রেমীরা সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন।

মেসি ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই যুবভারতীর পরিস্থিতি বদলে যায়। দর্শকদের অভিযোগ, মেসিকে ঘিরে ছিলেন ভিআইপিরা। গ্যালারি থেকে প্রায় ২০ মিনিট মেসিকে দেখা যায়নি। এই নিয়েই ক্ষোভ জমতে থাকে। একসময় বোতল ছোড়া শুরু হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে মেসি ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা দ্রুত মাঠ ছেড়ে চলে যান।

এরপরই যুবভারতীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চরম বিশৃঙ্খলা। ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় শতদ্রু দত্তকে। এবার সেই মামলায় ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে গিয়ে তদন্তে কী উঠে আসে, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্য।

্রিন্ট

আরও সংবদ