খুলনা | মঙ্গলবার | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১ পৌষ ১৪৩২

মেসির সঙ্গে ছবি নিয়ে কটূক্তি, স্ত্রী শুভশ্রীর হয়ে থানায় রাজ

খবর বিনোদন |
০৩:৪৯ পি.এম | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫


কলকাতায় লিওনেল মেসির সঙ্গে ছবি তোলা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটূক্তি ও কুরুচিকর মন্তব্যের শিকার হচ্ছেন টালিউড অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলি। এমন অভিযোগে নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন নির্মাতা, বিধায়ক ও শুভশ্রীর স্বামী রাজ চক্রবর্তী। টিটাগড় থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়াল-কে রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘একজন নারীকে যেভাবে অপদস্থ করা হয়েছে, তাতে টিটাগড় থানায় অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছি। এর পেছনে রাজনৈতিক উসকানি রয়েছে। কারা জড়িত, তা এখনই বিস্তারিত বলতে চাই না। এতে তদন্তে সমস্যা হতে পারে।’

এই অভিযোগ শুধু একটি আইনি পদক্ষেপ নয়, বরং ১৩ ডিসেম্বরের পর থেকে তৈরি হওয়া দীর্ঘ ও যন্ত্রণাময় সামাজিক বিতর্কেরই অনিবার্য পরিণতি বলে মনে করছেন অনেকে।

১৩ ডিসেম্বর কলকাতায় ফুটবল ইতিহাসে এক বিতর্কিত দিন হিসেবে থেকে যাবে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের গ্যালারিতে বসে হাজার হাজার দর্শকের স্বপ্নভঙ্গ হয়। মাসের পর মাস অপেক্ষা, বিপুল অর্থ ব্যয় করে টিকিট কেটে এসেও লিওনেল মেসিকে সামনে থেকে দেখার সুযোগ পাননি তাঁরা। মাঠজুড়ে ভাঙচুর, বিশৃঙ্খলা ও সেলফির উন্মত্ততার মধ্যেই তড়িঘড়ি মাঠ ছাড়েন বিশ্ব ফুটবল তারকারা। প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্ত গ্রেপ্তার হলেও ক্ষোভের অভিমুখ ঘুরে যায় অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে।

সেদিন যুবভারতীতে উপস্থিত ছিলেন শুভশ্রী। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলা চলচ্চিত্রশিল্পের প্রতিনিধি হিসেবেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু মেসির সঙ্গে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পরই শুরু হয় ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ ও কদর্য মিমের বন্যা। যেখানে বহু দর্শক টাকা দিয়েও তাঁদের প্রিয় খেলোয়াড়কে দেখতে পাননি, সেখানে ক্ষোভ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক— কিন্তু সেই ক্ষোভের লক্ষ্য কেন একজন অভিনেত্রী, সেই প্রশ্নই উঠেছে।

এই প্রশ্নই এবার প্রকাশ্যে তুলেছেন রাজ চক্রবর্তী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি শুধু স্বামীর পরিচয়ে নয়, একজন নাগরিক হিসেবেও প্রতিবাদ জানান।

পোস্টে রাজ লেখেন, যুবভারতীর অরাজকতা অনভিপ্রেত, লজ্জাজনক এবং ফুটবলপ্রেমী বাঙালির প্রতি চরম অসম্মান। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এত বড় আয়োজনের পরিকল্পনায় এমন গাফিলতি রয়ে গেল, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। দোষীদের শাস্তি দাবি করে রাজ বলেন, ওই দিন আঘাত পেয়েছে বাঙালির আবেগ।

এরপর তিনি শুভশ্রীর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিশৃঙ্খলার মাঝেই তিনি আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অথচ সেই উপস্থিতির খেসারত দিতে হচ্ছে তাঁকেই। অভিনেত্রী বলেই কি তিনি মেসির ভক্ত হতে পারেন না?

রাজের মতে, একজন মানুষের পরিচয় শুধু পেশায় সীমাবদ্ধ নয়। শুভশ্রী কখনো মা, কখনো বোন, কখনো স্ত্রী, কখনো অভিনেত্রী, আবার কখনো নিছক একজন ভক্ত— সব পরিচয়ের ঊর্ধ্বে তিনি একজন মানুষ।

গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ। সেদিন মাঠে বহু সাংবাদিক উপস্থিত থাকলেও কেন সহজ লক্ষ্য হিসেবে একজন অভিনেত্রীই ট্রোলের কেন্দ্রে পরিণত হলেন— তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ।

রাজের মতে, এই ট্রোলিং শুধু বর্তমানের অপমান নয়, ভবিষ্যতের জন্যও একটি বিপজ্জনক বার্তা বহন করে। প্রতিবাদ আর অপমানের মধ্যে যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে, তা বোঝা জরুরি।

্রিন্ট

আরও সংবদ