খুলনা | মঙ্গলবার | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২ পৌষ ১৪৩২

হাদির হামলাকারীরা সীমান্ত পার হয়েছে কি-না, নিশ্চিত নয় বিজিবি

হাদিকে গুলি : সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৮ এ.এম | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় সীমান্ত এলাকা থেকে মানুষ পারাপারকারী ফিলিপ স্নালের দুই সহযোগীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
শরীফুল ইসলাম বলেন, ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় সীমান্তে সতর্ক বিজিবি। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেলে বিজিবির ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের (৩৯ বিজিবি) বারোমারি বিওপির টহল দল দায়িত্বপূর্ণ এলাকা থেকে অবৈধভাবে মানুষ পারাপারে সহায়তাকারী ফিলিপের মামা শ্বশুর বেঞ্জামিন চিড়ান (৪৫) ও ফিলিপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সীশলকে (২৮) আটক করতে সক্ষম হয়।
এর আগে ফিলিপের স্ত্রী ডেলটা চিড়ান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি ও আরেক সহযোগী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে বিজিবি।
এদিকে সোমবার সকালে ময়মনসিংহের ৩৯ বিজিবির সেক্টর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পালানো ঠেকাতে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ৩৯ বিজিবির অধীন সীমান্তের সম্ভাব্য রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল ও চেকপোস্ট বসানো হয়। পরদিন শনিবার পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানের মাধ্যমে সন্দেহভাজন হিসেবে নালিতাবাড়ী উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে অবস্থানরত ফিলিপ নামের এক ব্যক্তিকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এই অঞ্চল দিয়ে ভারতে পালালে ফিলিপ ভালো বলতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি ও মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাঁদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।
শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি :  শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী সন্দেহভাজন ফয়সাল ও তার সহযোগী সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে গেছে কি না, সে বিষয়ে এখনো শতভাগ নিশ্চিত নয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে সীমান্তে তাদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ফিলিপ সেনাল নামের এক সন্দেহভাজন মানবপাচারকারীকে খুঁজছে যৌথ বাহিনী। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকায় হামলার ঘটনার পরপরই রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে সীমান্ত এলাকার সব স্পর্শকাতর পয়েন্ট, প্রবেশ ও বহির্গমন পথে বিজিবির টিম বসানো হয়। ময়মনসিংহ ও শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো থেকে বর্ডারের দিকে যাওয়ার রাস্তায় একাধিক চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, শুক্রবার সারারাত আমরা বর্ডার পাহারা দিয়ে রেখেছি। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি বিওপিগুলো থেকে অতিরিক্ত টহল দল বের করে সীমান্তের গ্যাপগুলো পূরণ করা হয়েছে। শনিবারও সারাদিন এই কার্যক্রম চলেছে এবং ময়মনসিংহ থেকে বাড়তি জনবল এনে নিরাপত্তা আরও কঠোর করা হয়েছে।
হামলাকারীরা ভারতের পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা কেউ শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারছি না যে আক্রমণকারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছে নাকি পালায়নি। পুলিশও নিশ্চিত নয়, আমরাও নই। আমরা দু’টি সম্ভাবনা মাথায় রেখেই কাজ করছি। যদি পালিয়ে থাকে, তবে কে সাহায্য করল? আর না পালালে কোথায় আছে বা কার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে-তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
আমরা ফিলিপকে ধরার জন্য আমরা সর্বাত্মক শক্তি আমরা নিয়োগ করেছি। আমরা গোয়েন্দা তৎপরতাও আমরা চালাচ্ছি। কারণ ফিলিপকে ধরা গেলে অনেক কিছুর তথ্য আমরা হয়তোবা বের করতে পারবো, যদি পাচার হয়ে থাকে। আর যদি না হয়ে থাকে, তাহলে ফিলিপের নামটা কেন বারবার আসছে সেটাও আমাদের জন্য জানাটা সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে ফিলিপ স্নালের স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানবপাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। পরে তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এছাড়া বারোমারি এলাকা থেকে বেঞ্জামিন চিরাম নামে আরও একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ