খুলনা | মঙ্গলবার | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২ পৌষ ১৪৩২

একাত্তর ও চব্বিশের দালালদের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি : নাহিদ ইসলাম

খবর প্রতিবেদন |
০২:২৩ পি.এম | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫


জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা স্বাধীন ভূখণ্ড পেলেও গত ৫৪ বছরের ইতিহাসে আমরা দেখেছি বাংলাদেশের জনগণের সাথে বারবার প্রতারণা করা হয়েছিল। একাত্তর এর দালালদের বিরুদ্ধে ও চব্বিশের  এর দালালদের বিরুদ্ধে আমরা বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের তরুণরা ঐক্যবদ্ধ আছি। সামনের বাংলাদেশে আমাদের বিজয় আসবে।

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিনসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বেলা ১২টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় দলটির সদস্য সচীব আক্তার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের সংগঠন সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ অনান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আজকের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুত্থান ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষেরা সম্মান, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচার নিয়ে বাঁচার সংকল্প করেছিল। এই ভূখন্ডের মানুষ যুগ যুগ ধরে লড়াই করেছে স্বাধীনতার জন্য, নিজের মানবিক মর্যাদার জন্য, সার্বভৌমত্বের জন্য। ৭১ সালেও এরকম একটি জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে যেতে হয়েছে। এই দেশের তরুণরা, এই দেশের সাধারণ মানুষ, সাধারণ কৃষক, তারা মুক্তি সংগ্রাম করেছিল। আমরা আজকের এই দিনে শ্রদ্ধার সাথে আমরা সেই সকল মুক্তিকামী মানুষদেরকে স্মরণ করি এবং আমাদের যারা শহীদ হয়েছিলেন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে, সেই সকল শহীদদেরকে স্মরণ করি। আমাদের বীরঙ্গনাদের আমরা স্মরণ করি। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা এই স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছিলাম। আমরা স্বাধীন ভূখণ্ড পেলেও গত ৫৪ বছরের ইতিহাসে আমরা দেখেছি বাংলাদেশের জনগণের সাথে বারবার প্রতারণা করা হয়েছিল।’

মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে এই দেশ আমরা গঠন করেছিলাম, সেই দেশের আমরা বিনির্মাণ করতে পারি নাই। এ দেশে না সাম্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে, না মানবিক মর্যাদা, না সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বরঞ্চ এই দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করা হয়েছিল। সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধেই ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং গণবিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। আমরা মনে করি, ’৪৭ থেকে ’৭১, ’৭১ থেকে ’২৪ যে ঐতিহাসিক লড়াই এই বঙ্গ জনপদের মানুষ করেছে, সেই লড়াই উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা সেই লড়াইকে ধারণ করে সামনের দিকের বাংলাদেশ আমরা বিনির্মাণ করতে চাই।’

বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজকে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমাদের বার্তা হলো, যারা পতিত শক্তি, ফ্যাসিস্ট শক্তি, তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নানান অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বাচনকে বাঞ্চালের চেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন চায় স্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলার স্বাভাবিক পরিবেশ। আমরা সরকারের প্রতি বারবার বলেছি, ওসমান হাদিকে যারা হত্যা করেছে, তাদেরকে যারা হত্যার চেষ্টা করেছে, গুলি চালিয়েছে, তাদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারে নাই এই সরকার।’

নিরাপত্তা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে আমাদের নিরাপত্তা নিজেদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে। ফলে জনগণের মধ্যে আমাদের সেই সংগঠন লাগবে। জনগণকে আমরা আবার আহ্বান জানাবো। ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা আমরা নিজেরাই নিশ্চিত করেছিলাম। তখন কোনো সরকার ছিল না, পুলিশ ছিল না। বাংলাদেশ সেই পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। সরকার পুলিশের উপর নির্ভরশীল করে আমরা আমাদের জীবন, আমাদের যুদ্ধ-জুলুম যোদ্ধাদের জীবনের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পারবো না।’

নির্বাচনকে গণভোট হিসেবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ফলে, মানুষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং সামনের যে নির্বাচন, এই নির্বাচনটি হচ্ছে গণভোট। ফলে, আগামী নির্বাচনে, আগামী গণভোটে সংস্কারের পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হবে। আমরা সেই প্রত্যাশা রাখি। এনসিপির যারা এমপি পদপ্রার্থী রয়েছেন, তারা সংস্কারের পক্ষে ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে শাপলাফুল নিয়ে জনগণের দরজায় যাবেন।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নিয়ে প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সংস্কারের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমরা কখনোই বাংলাদেশকে আর ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী জায়গায় ফেরত নিব না। বলে সেই নতুন বাংলাদেশের, সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এবং ভবিষ্যৎমুখী রাজনীতির প্রত্যয় আজকের এই বিজয় আমরা রাখছি এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমাদের এই আহ্বান থাকবে যে, আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। ’৭১-এর দালালদের বিরুদ্ধে, ’২৪ এর দালালদের বিরুদ্ধে আমরা বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের তরুণরা ঐক্যবদ্ধ আছি। সামনের বাংলাদেশে আমাদের বিজয় আসবে।’

্রিন্ট

আরও সংবদ