খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৩ পৌষ ১৪৩২

ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো

২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরব ইনশাআল্লাহ : তারেক রহমান

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৮ এ.এম | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫


বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবার নিজেও তার দেশে ফেরার তারিখ উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমি আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরে যাবো। আপনাদের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর কাজ করেছি।’ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
তারেক রহমান বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানটি প্রথমত দু’টি বিষয়, এক ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। এবং একইসাথে আপনাদের সাথে বহুদিন ছিলাম ১৭ প্রায় ১৮ বছর আপনাদের সাথে ছিলাম, কিন্তু আগামী ২৫ তারিখে ইনাশাআল্লাহ আমি দেশে চলে যাচ্ছি।
বিজয় দিবসের এই আলোচনা সভায় দেশবাসীদের সচেতন থাকার আহŸান জানিয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৭১ এ যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, ৭৫ এর ১৭ নভেম্বরে যারা পরাজিত হয়েছিল, ৮১ এ যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, ৯৬ তে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, এরপরেও যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই, এখনো ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
স্বপ্ন দেখিয়ে স্বৈরাচার সরকার বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ পাচার করেছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি স্বপ্ন দেখাতে বিশ্বাসী নয়, বিএনপি বিশ্বাস করে স্বপ্ন বাস্তবায়নে।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহŸান জানিয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সামনের দিন কিন্তু খুব সহজ হবে না। ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো সফল করতে পারবো। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো। 
তিনি বলেন, দু’মাস পর দেশে বহুল প্রত্যাশিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা যেমন বিএনপি’র দায়িত্ব, তেমনি দেশের মানুষের সামনে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরাও তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
তারেক রহমান বলেন, আমি কোনো স্বপ্নের মধ্যে নেই, আমি আছি পরিকল্পনার মধ্যে। খাদ্যের কিনারা থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া দেশকে উদ্ধার করেছিলেন। বিএনপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষের সমর্থনে সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে দলটি।
২০০৭ সালের এক-এগারো’র রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তারেক রহমান গ্রেফতার হন। পরবর্তীকালে ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান তিনি। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।
আমাকে বিদায় দিতে দয়া করে কেউ এয়ারপোর্টে যাবেন না : দেশে ফেরা উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র নেতাকর্মীদের এয়ারপোর্টে বিদায় দিতে ভিড় না করার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘আজকে এই অনুষ্ঠানটি প্রথমত দু’টি বিষয়, এক ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস এবং একইসাথে আপনাদের সাথে বহুদিন ছিলাম ১৭ প্রায় ১৮ বছর আপনাদের সাথে ছিলাম। কিন্তু আগামী ২৫ তারিখে ইনাশাআল্লাহ আমি দেশে চলে যাচ্ছি।’
তারেক রহমান বলেন, ‘প্রত্যেকের কাছে আমার একটা অনুরোধ, ২৫ তারিখে ইনশাআল্লাহ আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে আমি দেশে ফিরে যাবো। কিন্তু, এখানে উপস্থিত এই ঘরে উপস্থিত প্রত্যেকটি মানুষের কাছে আমার অনুরোধ, দয়া করে কেউ আপনারা সেদিন এয়ারপোর্টে যাবেন না। দয়া কেউ আপনারা যাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘এয়ারপোর্টে গেলে একটি হট্টগোল তৈরি হবে এবং মানুষ জানবে যে এরা সবাই বাংলাদেশি। এতে করে দেশের সুনাম নষ্ট হবে, দলের সুনাম নষ্ট হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘যারা সেদিন এয়ারপোর্টে যাবেন না, আমার আজকের এই অনুরোধ যারা রাখবেন, আমি ধরে নেব তারা দল এবং সর্বোপরি দেশের স্বার্থে সম্মানের প্রতি মর্যাদা রাখবেন। আর আমার নিষেধ করা পরও যারা যাবেন, আমি ধরে নিতে বাধ্য হবো তারা ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য সেখানে গিয়েছেন।’
২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে কারাগারে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয় তারেক রহমানের ওপর। ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি সবগুলো মামলা থেকে জামিন পান। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। আর ফেরেননি। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সপরিবারে বসবাস করছেন সেন্ট্রাল লন্ডনের এডমন্টনে। 
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। সবার একটাই প্রশ্ন, কবে তিনি দেশে ফিরবেন। বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা যদিও বলছিলেন, শিগগিরই দেশে ফিরবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। কিন্তু চূড়ান্ত কোনো তারিখ জানা যাচ্ছিল না।
এর আগে, গত শুক্রবার জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে এসে পৌঁছাবেন। দলের পক্ষ থেকে তাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে।
ওইদিন রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক হয়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। রাত সাড়ে ৯টায় এ বৈঠক শুরু হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ছাড়াও অন্য নেতারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে আসছেন। তার এ আগমনকে শুধু স্বাগত নয়, আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি।’
তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডাঃ জুবাইদা রহমান বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন ও শাশুড়ি খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে গত ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় আসেন তিনি। বর্তমানে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।
তারেক রহমান ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন। লন্ডন থেকেই দল পরিচালনা করছেন তারেক রহমান। এক-এগারোর সরকার এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শ’খানেক মামলা করা হয়েছিল। এর মধ্যে পাঁচটি মামলায় তার সাজাও হয়েছিল।

্রিন্ট

আরও সংবদ